
বৃহস্পতিবার, ৫ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » অপরাধ | অর্থনীতি » সন্দেহজনক লেনদেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর না পাওয়াতে আমার জিজ্ঞাসা? সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল
সন্দেহজনক লেনদেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর না পাওয়াতে আমার জিজ্ঞাসা? সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল
পক্ষকাল সংবাদ বিশ্লেষণ :
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১৭,৩৪৫টি সন্দেহজনক লেনদেন শনাক্ত করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২২.৯৬% বেশি। এসব লেনদেনের মধ্যে ১১৪টি আর্থিক গোয়েন্দা প্রতিবেদন বিভিন্ন তদন্ত সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে—সিআইডি, দুদক ও এনবিআরসহ।
একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে, বিএফআইইউ প্রধান এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম বলেন, “আমরা এই প্রতিবেদন গত বছরের (২০২৩-২৪) করেছি। তখন তো তিনি (মুহাম্মদ ইউনূস) প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন না। এটা যদি আমাদের নিয়মের মধ্যে থাকে যে রাষ্ট্রপ্রধানকে নিয়েও আমরা করব, এটা তো যাবে না- এ কথা তো নাই কোথাও।”
তিনি আরও বলেন, “এটা তো আছেই যে কাউকেই অন্তর্ভুক্ত করে প্রতিবেদন করব। প্রধান উপদেষ্টার কথাটা আমি মনে করি এখানে আপাতত না বললেই চলে।”
এই বক্তব্যে বোঝা যায়, বিএফআইইউ সন্দেহজনক লেনদেনের ক্ষেত্রে কোনো ব্যতিক্রম করে না, এমনকি রাষ্ট্রপ্রধানের ক্ষেত্রেও নয়। তবে, ইউনূসের নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।
এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময়, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দেশ থেকে ১৮ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। তবে এসব অর্থ ফেরানো সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।”
এই তথ্যগুলো দেশের আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।
সাংবাদিক শফিকুল ইসলামের একটি জিজ্ঞাসা হলো:
যখন আমরা বিএফআইইউ-এর প্রকাশিত তথ্য বিশ্লেষণ করি, তখন একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে ওঠে—সংস্থাটি ১৭ হাজারের বেশি সন্দেহজনক লেনদেন শনাক্ত করেছে, কিন্তু সাংবাদিকের সরাসরি প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নামটি নিয়ে বিএফআইইউ প্রধান দ্ব্যর্থক বক্তব্য দিয়েছেন।
যদি ইউনূস সম্পূর্ণরূপে এই সন্দেহজনক লেনদেন থেকে মুক্ত হতেন, তাহলে সেটি স্পষ্টভাবে অস্বীকার করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি তা করেননি। বরং এড়িয়ে গিয়ে বলেছেন, “প্রধান উপদেষ্টার কথাটা আপাতত না বললেই চলে।” এই মন্তব্যেই প্রমাণ হয়—তার নাম ওই তালিকায় থাকতে পারে এবং হয়তো এখনকার রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সংবেদনশীলতার কারণে তা প্রকাশ করা হচ্ছে না।
আমরা বিশ্বাস করি, এই ধরনের ‘সাংকেতিক নীরবতা’ আসলে একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কৌশল। ইউনূসের নাম প্রকাশ না করেও আভাস দিয়ে বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এটি জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি করছে এবং আর্থিক জবাবদিহিতার প্রশ্নে গুরুতর শঙ্কার জন্ম দিচ্ছে।
আমরা চাই, বিএফআইইউ তার রিপোর্টের পূর্ণাঙ্গ তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশ করুক এবং যদি ইউনূস সত্যিই এই লেনদেনের সাথে জড়িত থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধেও সমানভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক—কোনো অবস্থান বা পরিচয় বিবেচনা না করে। ন্যায়বিচারের জন্য এটি এখন সময়ের দাবি।