
বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
প্রথম পাতা » অপরাধ | রাজনীতি » অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ: প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার ও রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ: প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার ও রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা
রাজনৈতিক ডেস্ক |
দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টার বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনায় জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে—তারা কি সত্যিই নিরপেক্ষ, নাকি প্রশাসনিক ক্ষমতার আড়ালে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত?
বিশেষ করে কুমিল্লার মুরাদনগরে সাম্প্রতিক সংঘর্ষে আলোচনায় আসেন আসিফ , যিনি একজন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা,আসিফ কোনো রাজনৈতিক দলের সরাসরি নেতা না হলেও, তার কর্মকাণ্ড ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। স্থানীয়দের অভিযোগ, তিনি সরকারি ক্ষমতা ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন, নিজস্ব বাণিজ্যিক স্বার্থ রক্ষা, এমনকি স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন।
অভিযোগের অন্তরালে ক্ষমতার রাজনীতি
একাধিক অনুসন্ধানী সূত্রের দাবি, আসিফ প এবং আরও কয়েকজন অন্তর্বর্তী উপদেষ্টা সরাসরি চাঁদাবাজি, ব্যবসা দখল, এবং প্রভাব বিস্তারমূলক নিয়ন্ত্রণ চালিয়ে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, নির্বাচন সামনে রেখে তারা দেশে একটি ‘নিয়ন্ত্রিত বিশৃঙ্খলা’ বজায় রাখতে আগ্রহী—যার ফলে নির্বাচনী পরিবেশ বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মূল দায়িত্ব হওয়া উচিত ছিল প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা বজায় রাখা এবং সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা। কিন্তু বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তারা ব্যক্তিস্বার্থে প্রভাব খাটাচ্ছেন এবং সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক ভূমিকা পালন করছেন।
নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থাহীনতা বাড়ছে
এসব উপদেষ্টার কর্মকাণ্ড নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ও গ্রহণযোগ্যতার ওপরও প্রভাব ফেলছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এক ধরনের আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে।
প্রবীণ রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. ফারুক হোসেন বলেন,
“অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মানে হচ্ছে, তারা একটি দায়িত্বশীল ও নিরপেক্ষ কাঠামোর অংশ। কিন্তু তাদের কেউ যদি নিজ এলাকা বা গোষ্ঠীর স্বার্থে ক্ষমতার অপব্যবহার করেন, তাহলে গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপরই প্রশ্ন ওঠে। এটা শুধু দলীয় স্বার্থে নয়—রাষ্ট্রীয় স্বার্থেও ক্ষতিকর।”
সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা ও তথ্যগত শুদ্ধতা
এই প্রেক্ষাপটে, সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আসিফ আশরাফকে বিএনপির উপদেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করে প্রকাশিত সংবাদগুলো তথ্যগতভাবে ভুল এবং বিভ্রান্তিকর, যা জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ায়। সাংবাদিকতার ন্যূনতম নীতিমালাও বলে—ব্যক্তির রাজনৈতিক পরিচয় নির্ভুলভাবে উপস্থাপন করা আবশ্যক, বিশেষত যখন বিষয়টি সংবেদনশীল এবং প্রভাবশালী।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের নিরপেক্ষতার জায়গাটি আজ প্রশ্নবিদ্ধ। তারা কীভাবে এই দায়ভার নেবেন, নাকি রাজনৈতিক প্রভাবের বলয়ে থেকে সবকিছু ধ্বংস করে ফেলবেন—তা নির্ভর করছে সরকারের সততা ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসের ওপর। এখন সময় এসেছে, এসব বিতর্কিত উপদেষ্টার ভূমিকা খতিয়ে দেখার, উপদেষ্টা পরিষদ থেকে বাদ দেওয়া এবং শুদ্ধতা আনার—জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করতে হলে, আর সময়ক্ষেপণ করা যাবে না। হয়।