
সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
প্রথম পাতা » অপরাধ » সিডনিতেও উপদেষ্টা মাহফুজের সাড়ে ছয় কোটি টাকার কমিশন কেলেঙ্কারি
সিডনিতেও উপদেষ্টা মাহফুজের সাড়ে ছয় কোটি টাকার কমিশন কেলেঙ্কারি
বিশেষ অনুসন্ধান প্রতিবেদন
তারিখ: ২৮ জুলাই ২০২৫ | সোমবার
প্রতিবেদন: বিশেষ প্রতিনিধি
সিডনিতে সাড়ে ৬ কোটি টাকার ‘কমিশন কেলেঙ্কারি’!
‘আদর্শের গজিয়ে ওঠা আধ্যাত্মিক চ– ‘ মাহফুজ বিতর্কে, প্রশ্নবিদ্ধ ইউনুচ কাঠামো
নোয়াখালীর সন্তান থেকে আন্তর্জাতিক বিতর্কে মাহফুজ | অস্ট্রেলিয়ান গোয়েন্দা সংস্থার নজরে অস্বাভাবিক লেনদেন | জাতীয় পর্যবেক্ষণের দাবি তোলার সময় এসেছে!
সিডনি-ঢাকা সংযোগে দুর্নীতির ছায়া
আদর্শিক আন্দোলনের মুখ মাহফুজ, যিনি এক সময় নবপ্রজন্মের ‘মহানায়ক’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন, এখন অস্ট্রেলিয়ায় সাড়ে ৬ কোটি টাকার একটি লেনদেন ঘিরে বিতর্কের কেন্দ্রে। তথ্য অনুযায়ী, মাহফুজের বড় ভাই-অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী এক ছাত্র ও যাত্রীসেবক (ট্যাক্সি ড্রাইভার)-গত ৯ মাস ধরে বাংলাদেশ থেকে প্রেরিত কমিশনভিত্তিক অর্থ গ্রহণ করছিলেন। এসব লেনদেন ঘটছিল Commonwealth Bank of Australia-এর মাধ্যমে।
গত ২৪ জুলাই ২০২৫, মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা একটি অস্বাভাবিক পরিমাণ অর্থ স্থানান্তরের ঘটনা AUSTRAC (অস্ট্রেলিয়ার ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)-এর নজরে আসে। এর পরপরই সংশ্লিষ্ট ব্যাংক একাউন্টটি জব্দ করা হয় এবং তদন্তে নামে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
অভিযোগ: ফাইল তদবির থেকে কমিশন-ভাইয়ের অ্যাকাউন্টে জমা
মাহফুজ, যিনি দেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ‘লবিং’ ও ‘তদবির’-এর মাধ্যমে কমিশন পেতেন, সেই অর্থ নিয়মিত পাঠাতেন অস্ট্রেলিয়ায় তার ভাইয়ের নামে। গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, এই অর্থের উৎস একটি বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর প্রকল্প।
এই ঘটনায় মাহফুজ কেবল ব্যক্তি নন, বরং গোটা ‘সমন্বয় সিস্টেম’-কেই প্রশ্নের মুখে ফেলেছেন।
“দায় শুধু মাহফুজ নয়, গোটা কাঠামোই পচে গেছে” - একজন বিশ্লেষক
অনেকেই এই ঘটনার তুলনা করছেন বিগত ‘ছাগল কাণ্ড’ এর সাথে-যেখানে ক্ষমতার আড়ালে আদর্শকে ব্যবহার করে এক শ্রেণির লোক দুর্নীতিকে প্রতিষ্ঠা করেছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন:
“দায় কেবল মাহফুজের নয়। এ এক গোটা সমন্বয় চক্র, যারা আন্দোলনের নামে কোটি কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।”
জাতীয় পর্যবেক্ষণেই মিলবে প্রতিকার: সুপারিশ
এই প্রেক্ষাপটে, সময় এসেছে কেবল এক-দুজন ব্যক্তিকে নয়, বরং পুরো নেটওয়ার্ক-সমন্বয়ক ও তাদের first-degree relatives (পিতা-মাতা, ভাই-বোন, স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়ি, শ্যালক-শ্যালিকা)-এর সম্পদ ও লেনদেন রাষ্ট্রীয় পর্যবেক্ষণের আওতায় আনার।
বিশেষভাবে আলোচিত হাতিয়ার হান্নান মাসুদ ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীর পরিবার, এমনকি শ্বশুরবাড়ির সম্পত্তিও রাষ্ট্রীয় নজরদারির আওতায় আনার দাবি উঠেছে।
সতর্কতা না নিলে গতি রুদ্ধ হবে জনগণের পরিবর্তনের স্বপ্ন
দেশের কৃষক, শ্রমিক, তরুণ প্রজন্মের ত্যাগ আজ যেন বিফলে যাচ্ছে-যেখানে প্রকৃত ত্যাগী নেতারা পিছিয়ে পড়ছেন আর সুবিধাবাদী কিছু মুখোশধারী হয়ে উঠছে ক্ষমতার অংশীদার।
এখনই ব্যবস্থা না নিলে “নবপ্রজন্মের নেতৃত্ব” নামের আদর্শটাই হারিয়ে যাবে। সময় এসেছে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার-প্রয়োজনে বিচারের মুখে আনা হোক এই ‘সমন্বয় অর্থনীতি’র মূল কুশীলবদের।
এই প্রতিবেদন একটি বিশ্লেষণমূলক অনুসন্ধান। তদন্তাধীন বিষয় সম্পর্কে আইনগত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত চূড়ান্ত মন্তব্য নয়, বরং প্রেক্ষিত বিশ্লেষণ হিসেবে বিবেচনা করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।