
শনিবার, ৩ মে ২০২৫
প্রথম পাতা » বিশ্ব সংবাদ » রাশিয়ার অর্থনীতিতে অস্থিরতা: ব্যাংকিং খাতে ‘ডিপোজিটর প্যানিক’ ও সম্ভাব্য সংকট
রাশিয়ার অর্থনীতিতে অস্থিরতা: ব্যাংকিং খাতে ‘ডিপোজিটর প্যানিক’ ও সম্ভাব্য সংকট
বিশ্ব সংবাদ ; রাশিয়ার অর্থনীতিতে চলমান অস্থিরতা ব্যাংকিং খাতে একটি সম্ভাব্য সংকটের আশঙ্কা তৈরি করেছে। সেন্টার ফর ম্যাক্রোইকোনমিক অ্যানালাইসিস অ্যান্ড শর্ট-টার্ম ফরকাস্টিং (CMASF) এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, “ডিপোজিটর ফ্লাইট” বা আমানতকারীদের অর্থ উত্তোলনের প্রবণতা বেড়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, “জিওইকোনমিক অস্থিরতা” ব্যাংক অ্যাকাউন্টধারীদের মধ্যে “প্যানিক রিঅ্যাকশন” সৃষ্টি করতে পারে।
CMASF এর প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থায়, ০.৩ এর নিচে স্কোর মানে সিস্টেমিক লিকুইডিটি ঝুঁকির সম্ভাবনা কম। ০.৩ থেকে ০.৫ এর মধ্যে স্কোর মানে ডিপোজিটর ফ্লাইটের গড় সম্ভাবনা। তবে, এই ঝুঁকি ফেব্রুয়ারিতে ০.২৭ থেকে এপ্রিল মাসে ০.৬ এ পৌঁছেছে। এই স্তরটি সর্বশেষ মার্চ ২০২২ সালে পৌঁছেছিল, যখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আক্রমণ শুরু করেন।
এই পরিস্থিতিতে, রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক উচ্চ সুদের হার নির্ধারণ করেছে, যা ২০২৪ সালে ২১ শতাংশে পৌঁছেছে। এই পদক্ষেপটি মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য নেওয়া হয়েছে, যা ৮.৯ শতাংশে পৌঁছেছে—কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণেরও বেশি। এই উচ্চ সুদের হার ব্যাংকগুলিকে স্বল্পমেয়াদি আমানতের প্রতি আকৃষ্ট করেছে, যার ফলে আমানতকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমানত ফ্রিজ করতে পারে।
এই অর্থনৈতিক অস্থিরতা রাশিয়ার ব্যাংকিং খাতে একটি সংকট সৃষ্টি করতে পারে, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
রাশিয়ার অর্থনীতি বর্তমানে এক গভীর সংকটের মুখোমুখি, যেখানে ব্যাংকিং খাতে আমানতকারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে, যা ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলনের হিড়িক সৃষ্টি করতে পারে। সেন্টার ফর ম্যাক্রোইকোনমিক অ্যানালাইসিস অ্যান্ড শর্ট-টার্ম ফরকাস্টিং (CMASF) তাদের এপ্রিল মাসের প্রতিবেদনে সতর্ক করেছে যে, “ডিপোজিটর ফ্লাইট” বা আমানতকারীদের অর্থ উত্তোলনের সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। [1]
CMASF-এর পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই ঝুঁকি সূচক ছিল ০.২৭, যা এপ্রিল মাসে বেড়ে ০.৬-এ পৌঁছেছে। এই স্তরটি সর্বশেষ ২০২২ সালের মার্চ মাসে দেখা গিয়েছিল, যখন রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আক্রমণ শুরু করে।
অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে, রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এপ্রিল ২০২৫-এ তাদের মূল সুদের হার ২১% অপরিবর্তিত রেখেছে, যা ২০০০ সালের পর সর্বোচ্চ। এই উচ্চ সুদের হার ঋণ গ্রহণ ও বিনিয়োগকে ব্যয়বহুল করে তুলেছে, ফলে ভোক্তা ও ব্যবসায়িক খাতে খরচ কমে গেছে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়েছে।
রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২৫ সালের জন্য মুদ্রাস্ফীতির হার ৭.০-৮.০% পূর্বাভাস দিয়েছে, যা তাদের ৪.০% লক্ষ্যমাত্রার অনেক উপরে। তবে তারা আশা করছে, ২০২৬ সালে মুদ্রাস্ফীতি ৪.০% লক্ষ্যমাত্রায় ফিরে আসবে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, এই অর্থনৈতিক চাপের ফলে রাশিয়ার তরল আর্থিক রিজার্ভ ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ শেষ হয়ে যেতে পারে, যা দেশটিকে একটি গুরুতর আর্থিক সংকটে ফেলতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে, রাশিয়ার অর্থনীতি একটি সংকটময় সময় পার করছে, যেখানে ব্যাংকিং খাতে আমানতকারীদের মধ্যে আতঙ্ক, উচ্চ সুদের হার, মুদ্রাস্ফীতি এবং সম্ভাব্য আর্থিক রিজার্ভের ঘাটতি দেশটির অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।