
শুক্রবার, ২ মে ২০২৫
প্রথম পাতা » অর্থনীতি » নির্ধারিত সময়ের ২ মাস পূর্বে সকল দেনা পরিশোধ করল পেট্রোবাংলা
নির্ধারিত সময়ের ২ মাস পূর্বে সকল দেনা পরিশোধ করল পেট্রোবাংলা
পক্ষকাল প্রতিবেদক: বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫,
দেশের জাতীয় জ্বালানি খাতের অন্যতম প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ৩০ জুন ২০২৫ এর ২ মাস আগেই, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে সকল মেয়াদোত্তীর্ণ দেনা (External Overdue) পরিশোধে সক্ষম হয়েছে। ২০১৫ সালের অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে দায়িত্ব গ্রহণের পর পেট্রোবাংলার মোট দেনার পরিমাণ ছিল ৭৩৭.৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮,৭০২.০৩ কোটি টাকা), যা এখন ৩,৭৩৯.৯৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৫,২৫৩.৪০ কোটি টাকা) এ উন্নীত হয়েছে।
এই সফলতা অর্জনের পেছনে রয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা মহোদয়ের নেতৃত্বে, পেট্রোবাংলা এবং সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সম্মিলিত প্রচেষ্টা। তাদের যুগোপযোগী সমন্বয় এবং গতিশীল টিমওয়ার্কের ফলেই পেট্রোবাংলা নির্ধারিত সময়ের ২ মাস আগেই এই বিশাল পরিশোধ সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে।
সাফল্যের কৌশল:
পেট্রোবাংলা কর্তৃপক্ষ গ্যাস বিতরণ ও উৎপাদন কোম্পানির কাছে পাওনা আদায় নিশ্চিত করতে মাসিক লক্ষ্য নির্ধারণ করে এবং গ্যাস ব্যবহারকারী গ্রাহকদের নিয়মিত গ্যাস বিল পরিশোধ করানোর মাধ্যমে এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে। এছাড়া, আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও সার শ্রেণীতে গ্যাসের বিলের বকেয়া আদায়ের লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। এলএনজি সরবরাহকারীদের জন্য Stand by Letter of Credit (SBLC) ইস্যু এবং নির্ধারিত সময়ে আমদানির বিল পরিশোধের জন্য ব্যাংকসমূহের সহায়তা নেওয়া হয়।
মে মাসে বড় পরিমাণ পরিশোধ:
মার্চ এবং এপ্রিল ২০২৫ মাসে পেট্রোবাংলা কর্তৃক মোট ১,৪৪৫.৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ১৭,৮৫৭.৮৬ কোটি টাকা) পরিশোধ করা হয়েছে। এর ফলে, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে পেট্রোবাংলার কোনো মেয়াদোত্তীর্ণ দেনা নেই। আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি (আইওসি), এলএনজি সরবরাহকারী কোম্পানি, FSRU এবং ITFC-এর কাছে আর কোনো পাওনা নেই।
ভবিষ্যত প্রভাব:
এবং এই পরিশোধের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন আশা করা হচ্ছে। এর ফলে দেশের ক্রেডিট রেটিংয়ের উন্নতি হতে পারে এবং এলএনজি সরবরাহকারীদের পেট্রোবাংলার প্রতি আস্থা বৃদ্ধি পাবে। ফলে, এলএনজি আমদানির খরচ কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি, এলএনজি সরবরাহ চেইন ঝুঁকিমুক্ত হতে পারে, যার ফলে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায় এলএনজি সরবরাহ আরও নিশ্চয়তা পাবে।
পেট্রোবাংলার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
পেট্রোবাংলা আগামী দিনে গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করতে যাচ্ছে, পাশাপাশি, এলএনজি আমদানির পরিমাণ বাড়ানোর পদক্ষেপও নেয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে গ্যাসের প্রাইস গ্যাপ কমানোর জন্য পেট্রোবাংলা দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায় বেশি পরিমাণে এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা করেছে।
ধন্যবাদ জ্ঞাপন:
এ সফলতার জন্য পেট্রোবাংলা জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, অর্থ বিভাগ, শিল্প মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, পিডিবি, বিসিআইসি এবং ব্যাংকসমূহকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে। এছাড়া, পেট্রোবাংলা গ্যাস ব্যবহারকারী গ্রাহকগণের নিয়মিত বিল পরিশোধের জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।
এখন পেট্রোবাংলা আশা করছে, ভবিষ্যতে তাদের সকল পাওনা পরিশোধে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে এবং দেশের জ্বালানি খাত আরও শক্তিশালী হবে।