শিরোনাম:
ঢাকা, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২

Daily Pokkhokal
রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » রাজনীতি » বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ২০২৪-এর পর: নতুন সমীকরণ নাকি পুরনো ছায়া!
প্রথম পাতা » রাজনীতি » বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ২০২৪-এর পর: নতুন সমীকরণ নাকি পুরনো ছায়া!
১৮ বার পঠিত
রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ২০২৪-এর পর: নতুন সমীকরণ নাকি পুরনো ছায়া!

পরিবর্তনের ছায়ায় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের সঙ্কট এবং পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
আন্তর্জাতিক চাপ, অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা এবং জনগণের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ মিলে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন মাত্রা তৈরি হয়েছে।
এই পরিবর্তনের পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কও একটি নতুন পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছে।
ভারতের অবস্থান: সাবধানী কৌশলগত মিত্রতা
ভারত এখন বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অতীতের মতো সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে চাইছে না। বরং তারা “কৌশলগত দূরত্ব” রেখে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
বিশেষ করে,আমেরিকা,ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন,
মধ্যপ্রাচ্যীয় শক্তি এসব পক্ষের সক্রিয় ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত এখন আর বাংলাদেশের একমাত্র গেমচেঞ্জার থাকতে পারছে না।
ভারত বুঝেছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণে এখন অনেক খেলোয়াড় হাজির হয়েছে।
এজন্যই তারা এখন-নিজেদের স্বার্থ সংরক্ষণের নীতি নিচ্ছে,সরাসরি পক্ষ নেওয়ার বদলে সম্ভাব্য বিজয়ী পক্ষের সাথে সুসম্পর্ক রাখার চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় ভারতের চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক শক্তি বা সরকার যদি জাতীয় স্বার্থ এবং স্বাধীনতা আরও দৃঢ়ভাবে রক্ষা করতে চায়,
তাহলে ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ বাড়বে।
কারণ, এতদিন যেসব:ট্রানজিট সুবিধা, পানি চুক্তির শর্ত,
বাণিজ্যিক একতরফা সুবিধা সহ সব ধরনের চুক্তিতে বাংলাদেশ তুলনামূলক দুর্বল অবস্থানে ছিল, সেগুলোর পুনর্মূল্যায়নের চাপ আসতে পারে।
তাছাড়া, বাংলাদেশের জনগণের ভেতর ভারতের অতিরিক্ত প্রভাব নিয়ে এক ধরনের ক্ষোভ ও অবিশ্বাস দীর্ঘদিন ধরেই জমে আছে।
নতুন প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক দলগুলোর উপর এই জনমত আরও দৃঢ় প্রভাব ফেলতে পারে।
যার মানে হলো- বাংলাদেশ সরকার হোক যেই-হোক ভারতের সাথে সমঝোতার ক্ষেত্রেও জাতীয় স্বার্থের জায়গাটা বড় করে দেখতে হবে।
ভারতীয় উদ্বেগ: চীনের ছায়া
২০২৪-এর পর বাংলাদেশে চীনের প্রভাব আরও বেড়েছে।
বিশেষ করে অবকাঠামো নির্মাণ, বন্দর উন্নয়ন, এবং সামরিক সহযোগিতায় চীন সরাসরি আগ্রহ দেখাচ্ছে।
এই বাস্তবতায় ভারত গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
কারণ, বাংলাদেশের ওপর চীনের প্রভাব বাড়লে ভারতের কৌশলগত নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।
এছাড়া, বাংলাদেশের বন্দরগুলোর ওপর আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা তীব্রতর হচ্ছে, যা ভারতের স্বার্থকে সরাসরি প্রভাবিত করতে পারে।
ভবিষ্যতের সমীকরণ: সম্পর্কের নতুন ভারসাম্য
বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের ভূমিকা তিনটি স্তরে দেখা যাচ্ছে:
সংযত হস্তক্ষেপ:খোলামেলা সমর্থনের বদলে পর্দার আড়ালে যোগাযোগ ও সমঝোতা।
স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা: যে সরকারই আসুক, ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখতে চাপ থাকবে, কিন্তু সেটা আগের মতো একপাক্ষিক হবে না।
চীন ও অন্যান্য শক্তির প্রতিযোগিতা সামলানো বাংলাদেশকে পাশে রাখার জন্য ভারতকে বাস্তবিক উন্নয়ন সহযোগিতায় আরও বেশি সক্রিয় হতে হবে।
আসল কথা বন্ধুত্বের নতুন সংজ্ঞা প্রয়োজন
বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার বাইরে গিয়ে যদি ভারত আবারও একপাক্ষিক সম্পর্ক চাপাতে চায়, তবে সেটা আর আগের মতো মেনে নেওয়া হবে না।
নতুন বাংলাদেশ চায়:সমান মর্যাদা,স্বার্থের ভারসাম্য,অভ্যন্তরীণ বিষয়ে স্বাধীনতা।
ভারতেরও উচিত নিজেদের নীতি পুনর্বিবেচনা করে সত্যিকারের কৌশলগত বন্ধুত্ব গড়ে তোলা-
যেখানে বাংলাদেশের আত্মসম্মান, স্বাধিকার ও সার্বভৌমত্ব পূর্ণ মর্যাদা পায়।
নচেত, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের প্রভাব ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হবে, এবং অন্য শক্তির জন্য জায়গা তৈরি হবে।
শফিকুল ইসলাম কাজল



আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)