মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » আড়ংয়ের ট্রায়াল রুমে গোপন ক্যামেরা: তরুণীদের ১২০টি ভিডিও!
আড়ংয়ের ট্রায়াল রুমে গোপন ক্যামেরা: তরুণীদের ১২০টি ভিডিও!
পক্ষকাল সংবাদ-
একটি দুটি নয়, ১৩ ত`রুণীর ১২০টি ভি`ডিও তার কাছে। রাজধানীর বনানীতে আড়ংয়ের এক শো-রুমের ট্রায়াল রুমে পোশাক পরিবর্তন করার সময় এসব ভি`ডিও করেছিল সে।
এরপর যাদের ভি`ডিও করা হয়েছে, তাদের কাছে সেই ভি`ডিও পাঠাতো ফেসবুকের মেসেঞ্জারে। কখনও অর্থ দাবি কখনও বি’কৃত চাহিদার কথা জানাতো তাদের। কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি।
এক ত`রুণীর অ’ভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পু’লিশের সাইবার ক্রা’ইম বিভাগ সিরাজুল ইস’লাম সজীব (২২) নামে ওই তরুণকে গ্রে’প্তার করেছে। গ্রে’প্তার যুবক আড়ংয়ের বনানী শাখার সাবেক কর্মী।
গত শনিবার কাফরুল থানার পূর্ব শেওড়াপাড়ার মনিপুর স্কুলের সামনে থেকে তাকে গ্রে’প্তার করা হয়। তার বি’রুদ্ধে সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রা’ইম বিভাগের উপপরিদর্শক ফারুক হোসেন বাদী হয়ে বনানী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মা’মলা দায়ের করেন।
গ্রে’প্তার সজীব বাবার নাম মৃ’ত নূরে আলম স্বপন মুন্সী। গ্রামের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশন থানার আমিনাবাদে। রাজধানীর ১০৯৮ নম্বর পূর্ব শেওড়াপাড়ার একটি বাসায় থাকতো সজীব।
সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রা’ইম বিভাগের অ’তিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুল ইস’লাম বলেন, ‘আড়ংয়ের একজন অফিসার আমাদের কাছে এসেছিল। তাদের দেওয়া তথ্য মতেই আম’রা সজীবকে শনাক্তের পর গ্রে’প্তার করি। সজীবকে এক দিনের রি’মান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
মা’মলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আড়ংয়ের বনানী শাখায় কর্ম’রত এক নারী ১৬ জানুয়ারি একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তিনি অ’ভিযোগ করেন, ১১ জানুয়ারি রাত ১২টা ৩৭ মিনিটে সিরাজুল ইস’লাম সজীব তার ফেসবুক মেসেঞ্জারে সীমান্ত সৈকত নামে আরেকটি ফেসবুক আইডি থেকে পাঠানো একটি ভি`ডিও দেখতে বলে।
ওই নারী ভি`ডিওতে দেখেন, আড়ংয়ের বনানী শাখার চতুর্থ তলার কর্মচারীদের জন্য পোশাক পরিবর্তন রুমে, পোশাক পরিবর্তন করার সময় তার ভি`ডিও ধারণ করে পাঠিয়েছে। এ সময় সজীব তাকে ভি`ডিও করে শ`রীর দেখাতে বলে এবং তার কথা মতো কাজ না করলে ভি`ডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভা`ইরাল করার হু`মকি দেয়।
মা’মলার ত’দন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সজীবের কাছ থেকে একটি রেডমি ৫ প্লাস ফোনসেট জ’ব্দ করা হয়। ওই মোবাইলে তার নিজের ফেসবুক আইডি লগইন অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে আড়ংয়ের ওই নারীকর্মীর ভি`ডিও করা এবং হু`মকি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সজীব জানিয়েছে, আড়ংয়ে চাকরিরত অবস্থায় সজীব চতুর্থ তলার কর্মচারী চেঞ্জরুমের বাইরের সানসেট-এ দাঁড়িয়ে সেলফি স্টিক দিয়ে মোবাইল ক্যামেরার মাধ্যমে নারী কর্মচারীদের অজান্তে তাদের নিজস্ব ইউনিফর্ম পরিবর্তন করার ভি`ডিও ধারণ করতো। তার কাছ থেকে ১৩ জন ত`রুণীর ১২০টি ভি`ডিও উ’দ্ধার করা হয়েছে।
ত’দন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মক’র্তা জানান, ২০১৯ সালের অক্টোবরে এক নারীকর্মীর ভি`ডিও করার অ’ভিযোগে ডিসেম্বর মাসে সজীবকে চাকরিচ্যুত করা হয়। তবে তার কাছে আগের করা সব ভি`ডিওগুলো সংরক্ষিত ছিল। তাকে এক দিনের রি’মান্ডে আনা হয়েছে। তার কাছ থেকে আরও তথ্য উ’দ্ধারের চেষ্টা চলছে।
আড়ংয়ের চিফ অ’পারেটিং অফিসার আশরাফুল আলম জানান, বিষয়টি স’ম্পর্কে অবহিত আছি। মা’মলা দায়ের করার ব্যাপারে অ’ভিযোগকারীকে শুরু থেকেই সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে আসছি। আড়ং যৌ’ন হয়’রানিমূলক যেকোনো কর্মকা’ণ্ডের বি’রুদ্ধে নীতিগতভাবে সর্বদা কঠোর অবস্থানে থাকে।
এ ধরনের কর্মকা’ণ্ডে জ’ড়িত থাকায় গত বছরের ডিসেম্বরে সজীবকে চাকরিচ্যুত করা হয়। বর্তমানে চলমান মা’মলা’টির কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য আড়ংয়ের পক্ষ থেকে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে সার্বিক সহায়তা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।