
বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
প্রথম পাতা » রাজনীতি | সম্পাদক বলছি » বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতিপথ: ঘরে ঘরে সংঘাত, সেনা শাসন নাকি নতুন গণতান্ত্রিক বিন্যাস?
বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতিপথ: ঘরে ঘরে সংঘাত, সেনা শাসন নাকি নতুন গণতান্ত্রিক বিন্যাস?
সম্পাদকীয় বাংলাদেশের রাজনৈতিক গতিপথ: ঘরে ঘরে সংঘাত, সেনা শাসন নাকি নতুন গণতান্ত্রিক বিন্যাস?
২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে এসে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা এক বহুমুখী সংকটের মুখোমুখি। শেখ হাসিনার পতনের পর সেনাবাহিনীর ব্যারাক ত্যাগ, অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আগমন, এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতি-সব মিলিয়ে দেশ যেন এক অনিশ্চিত মোড়ের দিকে এগোচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে: বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কি ঘরে ঘরে সংঘাতের দিকে যাচ্ছে? সেনা শাসনের সম্ভাবনা কি বাস্তব হয়ে উঠছে? নাকি একটি নতুন গণতান্ত্রিক বিন্যাসের সূচনা হতে যাচ্ছে?
ঘরে ঘরে সংঘাত: সামাজিক অস্থিরতার বিস্তার
সাম্প্রতিক সময়ে ডিস ব্যবসায়ী হত্যাকাণ্ড, রাজনৈতিক সমাবেশে হামলা, এবং আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুনরায় সক্রিয়তা ইঙ্গিত দেয় যে নিচতলার নিরাপত্তা কাঠামো ভেঙে পড়ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্বলতা এবং সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত দায়িত্ব গ্রহণ প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
যুক্তরাজ্যসহ আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি বাড়ছে, যা ঘরে ঘরে সংঘাতের আশঙ্কাকে বাস্তব করে তুলছে।
সেনা শাসনের সম্ভাবনা: বাস্তবতা না গুজব?
সেনাবাহিনীর জরুরি বৈঠক, ইউনূস সরকারের প্রতি অনাস্থা, এবং রাষ্ট্রপতির ওপর চাপ সৃষ্টি করে জরুরি অবস্থা ঘোষণার সম্ভাবনা-সব মিলিয়ে সামরিক হস্তক্ষেপের গন্ধ স্পষ্ট3।
যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা বারবার বলেছেন, সেনা শাসনের কোনো প্রেক্ষিত নেই5, বাস্তবতা বলছে-সেনাবাহিনী এখন আর শুধু নিরাপত্তা বাহিনী নয়, প্রশাসনিক অংশীদার।
????️ নতুন গণতান্ত্রিক বিন্যাস: সম্ভাবনা ও প্রতিবন্ধকতা
শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গঠিত আন্দোলন, এনসিপি ও অন্যান্য নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান, এবং জনগণের বাইনারি রাজনীতির বাইরে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা-সবই নতুন রাজনৈতিক বিন্যাসের সম্ভাবনা তৈরি করছে7।
তবে নির্বাচনকালীন রোডম্যাপের অনুপস্থিতি, সংবিধান সংশোধনের অনিশ্চয়তা, এবং রাজনৈতিক দলগুলোর বিভাজন এই সম্ভাবনাকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে।
???? রাজনৈতিক ভবিষ্যদ্বাণী: কোন পথে বাংলাদেশ?
সম্ভাব্য গতিপথ প্রধান চালক ঝুঁকি সম্ভাবনা
ঘরে ঘরে সংঘাত আইনশৃঙ্খলার ভাঙন, অপরাধচক্র গৃহযুদ্ধ, মানবিক বিপর্যয় মধ্যম
সেনা শাসন রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, প্রশাসনিক ব্যর্থতা গণতন্ত্রের স্থবিরতা, আন্তর্জাতিক চাপ সীমিত কিন্তু বাস্তব
গণতান্ত্রিক পুনর্গঠন শিক্ষার্থী নেতৃত্ব, নতুন দল, আন্তর্জাতিক সহায়তা সময়সাপেক্ষ, বিভাজন উচ্চ, যদি রোডম্যাপ নিশ্চিত হয়
????️ উপসংহার: সুবোধ আসবে কি?
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখন একটি সংবেদনশীল মোড়ের ওপর দাঁড়িয়ে। ঘরে ঘরে সংঘাতের সম্ভাবনা যেমন বাস্তব, তেমনি সেনা শাসনের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের পথ-যদিও কঠিন-সবচেয়ে স্থায়ী ও গ্রহণযোগ্য বিকল্প।
সুবোধ আসবে কি না, তা নির্ভর করছে-
অন্তর্বর্তী সরকারের রোডম্যাপ ঘোষণার সাহস,
রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ ও সমঝোতা,
এবং জনগণের সংগঠিত প্রত্যাশা ও চাপের ওপর।