শিরোনাম:
ঢাকা, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২

Daily Pokkhokal
শনিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » অপরাধ | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর প্রতিবেদন ধনীদের লোভের আগুনে পুড়েছে চকবাজারের বাসিন্দারা
প্রথম পাতা » অপরাধ | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর প্রতিবেদন ধনীদের লোভের আগুনে পুড়েছে চকবাজারের বাসিন্দারা
৩৯৯ বার পঠিত
শনিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর প্রতিবেদন ধনীদের লোভের আগুনে পুড়েছে চকবাজারের বাসিন্দারা

অনলাইন ডেস্ক

চকবাজারে আগুন থেকে সৃষ্ট ভয়াবহ ট্র্যাজেডির নেপথ্যে ধনীদের লোভকেই প্রধান কারণ হিসেবে শনাক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংবাদপত্র নিউ ইয়র্ক টাইমস। চুড়িহাট্টায় ২০ ফেব্রুয়ারির (বুধবার) আগুনে পুড়ে এরইমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৭ জন। এ সংক্রান্ত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, দারিদ্র্য আর ঘনবসতি নয়, পুরান ঢাকার আবাসিক ভবনে মজুত করে রাখা অনুমোদনবিহীন রাসায়নিক ও দাহ্য পদার্থই এই বিপুল পরিমাণ প্রাণহানীর জন্য দায়ী। মুনাফার স্বার্থে ধনী ব্যবসায়ীরা কখনও ঘুষ দিয়ে, কখনও আবার গোপনে আইন ভঙ্গ করে প্লাস্টিক তৈরিতে ব্যবহৃত রাসায়নিকের মতো দ্রব্য আবাসিক ভবনে রেখে দেয়। অনুসন্ধানে বলা হয়েছে, চকবাজারের বাসিন্দারা ধনীদের ওই লোভের আগুনেই পুড়ে মরেছেন।

নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে দশটার পর যখন চকবাজারে প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে তখন সংশ্লিষ্ট রাস্তাটিতে তিল ধারণের স্থান ছিল না। চারিদিকে মানুষ, গাড়ি, মোটরসাইকেল। প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি গাড়ির সিএনজি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ফলে ক্রমান্বয়ে অন্যান্য গাড়ির সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হতে থাকে। একব পর্যায়ে একটি হোটেলে রান্নার গ্যাস রাখা সিলিন্ডারও বিস্ফোরিত হয়। পাশেই একটি ছোট দোকানে অনুমোদনবিহীনভাবে রাখা ছিল রাসায়নিক। মুহূর্তেই সেখানে ধরে যায় আগুন। দোকানের পাশের একটি আবাসিক ভবনে রাখা ছিল বডি স্প্রের হাজার হাজার বোতল। বিস্ফোরিত হতে শুরু করে সেগুলোও। এভাবেই হু হু করে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বাংলা ট্রিবিউনের নিজস্ব অনুসন্ধান থেকেও জানা গেছে, আগুনে পুড়ে যাওয়া ৫টি ভবনের গোডাউনেই কেমিক্যাল ছিল। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক মেজর এ কে এম শাকিল নেওয়াজ আবাসিক এলাকায় বেআইনিভাবে রাখা ওইসব দাহ্য পদার্থকে সেলফ্ মেইড এক্সপ্লোসিভ (নিজ থেকেই বিস্ফোরকে পরিণত হওয়া) আখ্যা দিয়েছেন।

নিউ ইয়র্ক টাইমস বাংলাদেশকে এশিয়ার অন্যতম দরিদ্র ও ঘনবসতিপূর্ণ দেশ আখ্যা দিলেও তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এই দারিদ্র্য কিংবা অতিরিক্ত জনসংখ্যা দিয়ে চকবাজারের আগুনের সামগ্রিক পটভূমি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া সম্ভব না। ঢাকার একজন স্থপতি নাজিম উদ্দিন আহমেদ ওই সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এটা দারিদ্র্যের ব্যাপার নয়, লোভের পরিণতি। যারা আবাসিক ভবনগুলোতে রাসায়নিক পণ্য মজুত রাখে, তারা আসলে অনেক ধনী। তাদের গাড়ি আছে। সুন্দর বাড়ি আছে। তাদের ছেলে-মেয়েরা বিদেশে পড়াশোনা করে।’

প্রতিবেদনে ৮ বছর আগের প্রায় একই ধারার একটি আগুন ট্রাজেডি তুলে ধরা হয়েছে। ২০১০ সালে পুরান ঢাকার নিমতলীতে একটি ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল এক আবাসিক ভবনে। অনুমোদন ছাড়াই ওই ভবনের নিচতলায় রাসায়নিক দ্রব্য রাখা হয়েছিল। এবারের মতো ওই সময়েও সেখানে ফায়ার সার্ভিস পৌঁছাতে বেগ পেতে হয়েছিল অপ্রশস্ত রাস্তায় বিপুল যানজটের কারণে। নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, ওই ঘটনার পর সরকারি কর্মকর্তারা বিল্ডিং কোড মেনে চলার বিষয়ে শক্ত অবস্থান নেওয়ার অঙ্গীকার করলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।

আইন বিশ্লেষকদের উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ আবাসিক ভবনগুলোর জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকলেও তার যথাযথ প্রয়োগ নেই। নজরদারির অভাব কিংবা দুর্নীতির কারণে এ সংক্রান্ত নীতিমালা অকার্যকর। ধনী ব্যবসায়ীরা নিয়মিত সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে বা তাদের ব্যবসার বিষয়ে তথ্য গোপন করে পার পেয়ে যায়। তাদের লোভের আগুনে পোড়ে নিরীহ পথচারী থেকে শুরু করে দরিদ্র রিকশাচালক- নিম্ন বেতনের দোকান কর্মচারীরা। স্থপতি নাজিম উদ্দিন নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, ‘সরকারের উচিত ছিল এসব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। তবে তা হয়ে ওঠেনি।’

বৃহস্পতিবার ভোরে যখন ফায়ার ব্রিগেড আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ততক্ষণে চকবাজার পুড়ে ছাই। নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, আগুনের কুণ্ডলী যেন রাস্তা- সাইকেল-রিকশা-গাড়ি-মানুষকে ঘিরে ধরছিল ক্রমশঃ। ক্রমাগত মৃত্যুর মিছিলে যোগ দিচ্ছিলেন গাড়ির চালক, মোটরসাইকেল আরোহী, রিকশার যাত্রী-চালক, পথচারী। রাস্তাজুড়ে ছড়িয়ে ছিল আগুনে পুড়ে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া রঙ ওঠা গাড়ির অবশেষ, কালচে ধাতব খণ্ডাংশ আর ভেঙে পড়া ভবনের দেয়াল। সেসবের মধ্য দিয়ে ফায়ার ব্রিগেড কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা মৃতদেহগুলোকে একে একে সাদা ব্যাগে ভরে নিয়ে যান। পরিস্থিতিকে নিউ ইয়র্ক টাইমস তুলনা করেছে ‘যুদ্ধক্ষেত্র’র

প্রত্যক্ষ ভূক্তভোগীদের একজন মোহাম্মদ রাকিব নিউ ইয়র্ক টাইমসকে জানান, একজন রিকশাচালককে ছুটে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে দেখেছেন তিনি। তবে রাকিবের চোখের সামনেই আগুনের কুণ্ডলী ঘিরে ধরে তাকে। জীবন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান ওই রিকশাওয়ালা।



এ পাতার আরও খবর

সারজিস আলমের ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বাসা থেকে ৩ বস্তা টাকা উদ্ধার: রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সারজিস আলমের ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বাসা থেকে ৩ বস্তা টাকা উদ্ধার: রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড়
একজন গুমের শিকার সাংবাদিকের জিজ্ঞাসা একজন গুমের শিকার সাংবাদিকের জিজ্ঞাসা
বাংলাদেশে মবের শাসন: যখন রাষ্ট্র নীরব, তখন জনতা হয়ে ওঠে জল্লাদ বাংলাদেশে মবের শাসন: যখন রাষ্ট্র নীরব, তখন জনতা হয়ে ওঠে জল্লাদ
গণপিটুনি: ধর্ষণ আইনহীনতার ভয়াবহ প্রতিচ্ছবি ইউনুসের শাসনকাল গণপিটুনি: ধর্ষণ আইনহীনতার ভয়াবহ প্রতিচ্ছবি ইউনুসের শাসনকাল
ভিআইপি রুম না পেয়ে যুবদল নেতার অনুসারীদের বার ভাঙচুর, নারী লাঞ্ছনার অভিযোগ ভিআইপি রুম না পেয়ে যুবদল নেতার অনুসারীদের বার ভাঙচুর, নারী লাঞ্ছনার অভিযোগ
কেএনএফের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অভিযান সফল, নিহত ‘মেজর’সহ উদ্ধার বিপুল অস্ত্র কেএনএফের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর অভিযান সফল, নিহত ‘মেজর’সহ উদ্ধার বিপুল অস্ত্র
সদ্য অবসরে যাওয়া শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফার বিপুল সম্পদের মালিকানা নিয়ে রহস্য সদ্য অবসরে যাওয়া শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফার বিপুল সম্পদের মালিকানা নিয়ে রহস্য
‘ব্যালট’ প্রকল্পে ৪.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান দেওয়ার ঘোষণা- ‘ব্যালট’ প্রকল্পে ৪.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান দেওয়ার ঘোষণা-
পেতংতার্নকে বরখাস্ত এবং তার বিরুদ্ধে নৈতিকতা লঙ্ঘনের অভিযোগে তদন্ত শুরু পেতংতার্নকে বরখাস্ত এবং তার বিরুদ্ধে নৈতিকতা লঙ্ঘনের অভিযোগে তদন্ত শুরু
বিদেশি এজেন্টদের হাতে বাংলাদেশ-দায়মুক্তির রাজনীতি ও গণতন্ত্রের অপমৃত্যু বিদেশি এজেন্টদের হাতে বাংলাদেশ-দায়মুক্তির রাজনীতি ও গণতন্ত্রের অপমৃত্যু

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)