শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

Daily Pokkhokal
বুধবার, ২১ জুন ২০১৭
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন : বিজেপির মাস্টারস্ট্রোক
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন : বিজেপির মাস্টারস্ট্রোক
৩১৬ বার পঠিত
বুধবার, ২১ জুন ২০১৭
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন : বিজেপির মাস্টারস্ট্রোক

---
সুবীর ভৌমিক, জুন ২১, ২০১৭
ভারতের পররর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য দলীয় প্রার্থী হিসেবে রাম নাথ কোবিন্দকে মনোনীত করার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ একটি রাজনৈতিক মাস্টারস্ট্রে খেললেন।

কোবিন্দ দলিত (নিম্নবর্ণের), ভারতের সামাজিক অচ্ছ্যুৎ শ্রেণীর সদস্য হলেও তিন দশক ধরে উত্তর প্রদেশে বিজেপিকে নিম্নবর্ণের লোকদের কাছে নেয়ার কাজ করে যাচ্ছিলেন।

নিম্নবর্ণের কৃষক পরিবার থেকে আসা কোবিন্দকে মনোনীত করাটা গ্রামীণ গরিব মানুষের প্রতি বিজেপি যে সহানুভূতিশীল সেটাই তুলে ধরবে। মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের মতো বিজেপির ঘাঁটিগুলোতে যখন কৃষক বিক্ষোভ চলছে, তখন এই কাজটি করা হলো।

এটা কেবল উত্তর প্রদেশেই নয়, উত্তর ভারতজুড়েই নিম্নবর্ণের মানুষদের মধ্যে বিজেপিকে জনপ্রিয় করে তুলবে।

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতিশ কুমার, উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীর মতো নিম্নবর্ণের নেতারা কোভিন্দের মনোনয়নকে স্বাগত জানিয়েছেন। এর মানে হলো, একটি সাহসী পদক্ষেপের মাধ্যমে মোদি-শাহ জুটি বিরোধী শিবিরকে বিভক্ত করে ফেলেছেন।

বিজেপি এখন যে কোভিন্দের জয় নিশ্চিত করার জন্য কেবল নিম্নবর্ণের অনেক দল ও ব্লকেরই সমর্থন পাবে তা নয়, সেক্যুলার শিবিরকে ভবিষ্যতে বিভক্ত করে ২০১৯ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনেও ভালো করবে।

কোবিন্দ এখন বিহারের গভর্নর। এনডিএ’র প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন নিয়ে (নিতিশ বিজেপির সাথে বিরোধে জড়িয়ে জোট থেকে বেরিয়ে লালু প্রসাদ যাদবের সাথে জুটি বেঁধে দুই বছর আগে রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে দারুণ সাফল্য লাভ করেছিলেন) দ্বন্দ্বের পর কোবিন্দও নিতিশ কুমার ও মোদিকে কাছাকাছি নিয়ে এসেছেন। বিজেপি যদি নিতিশকে ফের এনডিএ জোটে নিয়ে আসতে পারে, তবে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া প্রায় পুরো গাঙ্গেয় অববাহিকা তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

কোবিন্দ আইনজীবী, তিনি হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে প্রাকটিস করেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাইয়ের (ভারতের প্রথম অ-কংগ্রেসীয় সরকারের আরএসএস সদস্য হিসেবে দেখা হয়েছিল) ব্যক্তিগত সহকারী এবং জাতিসঙ্ঘে (২০০২ সালে ইউএনজিএ বক্তৃতা করেছিলেন) ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।

মোদি বলেছেন, কোবিন্দ হবেন ‘অনবদ্য রাষ্ট্রপতি।’ তিনি যে কিতাবি ব্যবস্থা এড়িয়ে চলতে চান, সেটাই প্রতিফলিত হলো।

তবে সবশেষে বিজেপি-আরএসএস রাষ্ট্রপতি ভবনে তাদের লোক পাওয়াটা প্রায় নিশ্চিত করে ফেললো।

কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিই তীব্র আপত্তি তুলেছেন এই বলে যে, ‘কোবিন্দ কে?’ এই মন্তব্য দিয়ে আসলে মোদি-শাহ যে তাদের মনোনয়নের মাধ্যমে বিরোধী শিবিরকে ধরাশায়ী করে ফেলেছেন, সেটাই বলে দিলেন।

মমতা চেয়েছিলেন প্রণব মুখার্জি যাতে দ্বিতীয় মেয়াদে থাকতে পারেন। তিনি পুরো বিরোধী শিবিরকে একত্রিত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু এর মাধ্যমে তার সেই উদ্যোগ ভণ্ডুল হতে দেখে হতাশ হয়েই সম্ভবত তিনি বলেছেন, ‘এ কাকে ক্যান্ডিডেট করলো, চিনি না তো।’

মায়াবতীর সমর্থনটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বিজেপি তার সমর্থন জোগাড় করতে পারলে ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য ইউপিতে তাদের শক্তি আরো বাড়বে।
মায়াবতী যদি সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেসের সাথে কোনো শিথিল জোটে যোগ দেন, তবে আগামী পার্লামেন্ট নির্বাচনে ইউপিতে বিজেপির সম্ভাবনা হুমকির মুখে পড়তে পারে।

২০১৪ সালে ইউপিতে পার্লামেন্টের ৮৪টি আসনের মধ্যে ৭১টিতে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। এ ধরনের সাফল্যের পুনরাবৃত্তি ছাড়া লোকসভায় তার এ ধরনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া হবে কঠিন ব্যাপার।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক জয়ন্ত রায় বলেন, কোবিন্দকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনীত করার মাধ্যমে মোদি ও শাহ এক ঢিলে অনেক পাখি শিকার করেছেন।

এখানেই শেষ নয়। তারা দলের ভেতরকার ভিন্নমতও দমন করেছেন।

বিজেপির যেসব নেতা এল কে আদভানি কিংবা পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে দলের রাষ্ট্রপতি প্রার্থী করতে চেয়েছিলেন, তারা এই সিদ্ধান্তে চুপসে গেছেন।
রায় বলেন, ‘এ ধরনের ব্যাকগ্রাউন্ডের কোনো দলিত প্রার্থীকে তারা কিভাবে বিরোধিতা করবেন?’

ভারতের বিপুল অচ্ছ্যুৎ শ্রেণী একটি শক্তিশালী ভোট ব্যাংক। ২০১৯ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে মোদি-শাহ জুটির ফায়দা হাসিলের খেলা সবেমাত্র শুরু হলো।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফলাফল প্রায় নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। আগামী পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি ভবনে কোবিন্দ অবস্থান নিশ্চিত করার কৌশলের মাধ্যমে হয়তো ২০১৯ সালের জন্য আসল যুদ্ধ শুরু হলো।



এ পাতার আরও খবর

বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের রেকর্ড বৃদ্ধি: ব্যাংক খাতে সংকট বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের রেকর্ড বৃদ্ধি: ব্যাংক খাতে সংকট
লন্ডনে বিলাস, দেশে ভোটের প্রতারণা - ইউনূসের ভণ্ড রাজনীতির মুখোশ উন্মোচন কসিম উদ্দিনের বয়ান সমাচার লন্ডনে বিলাস, দেশে ভোটের প্রতারণা - ইউনূসের ভণ্ড রাজনীতির মুখোশ উন্মোচন কসিম উদ্দিনের বয়ান সমাচার
বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্ণর আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে ঘুষ, চক্রান্ত ও অবৈধ নিয়োগের অভিযোগ! বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্ণর আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে ঘুষ, চক্রান্ত ও অবৈধ নিয়োগের অভিযোগ!
ইউনূসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক  অপরাধ আদালতে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি ইউনূসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি
ড. ইউনূসের লন্ডন সফর: রাষ্ট্রীয় খরচে ব্যক্তিগত সম্মাননা, জনমনে প্রশ্ন ড. ইউনূসের লন্ডন সফর: রাষ্ট্রীয় খরচে ব্যক্তিগত সম্মাননা, জনমনে প্রশ্ন
সন্দেহজনক লেনদেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের  উত্তর না পাওয়াতে আমার জিজ্ঞাসা?  সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল সন্দেহজনক লেনদেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর না পাওয়াতে আমার জিজ্ঞাসা? সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল
সন্দেহজনক লেনদেন ইউনূসের নাম পরিষ্কার করে বললেন না বি এফ ইইউ প্রধান সন্দেহজনক লেনদেন ইউনূসের নাম পরিষ্কার করে বললেন না বি এফ ইইউ প্রধান
নূর আলী ও ইউনিক গ্রুপ: কর্পোরেট ক্ষমতার ছায়ায় দুর্নীতির অভিযোগ নূর আলী ও ইউনিক গ্রুপ: কর্পোরেট ক্ষমতার ছায়ায় দুর্নীতির অভিযোগ
সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের নতুন প্রস্তাবিত শাসন ব্যবস্থা সরকার ব্যবস্থা সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের নতুন প্রস্তাবিত শাসন ব্যবস্থা সরকার ব্যবস্থা
প্রস্তাবিত বাজেটেও কালোটাকা সাদা করার সুযোগ সংস্কারের বিপরীতে চলছে অন্তর্বর্তী সরকার: টিআইবি প্রস্তাবিত বাজেটেও কালোটাকা সাদা করার সুযোগ সংস্কারের বিপরীতে চলছে অন্তর্বর্তী সরকার: টিআইবি

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)