শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২

Daily Pokkhokal
রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » মুক্তিযোদ্ধা তালিকা চূড়ান্ত হবে কবে?
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » মুক্তিযোদ্ধা তালিকা চূড়ান্ত হবে কবে?
৫০৪ বার পঠিত
রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

মুক্তিযোদ্ধা তালিকা চূড়ান্ত হবে কবে?

---

সংবাদ পক্ষকাল  : বিজয়ের ৪৫ বছর পার হলেও এখনো চূড়ান্ত হয়নি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া জাতির বীর সন্তান তথা মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা। আর বিষয়টির সুরাহা না হওয়ায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক চলছেই।

অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের মুক্তিযোদ্ধা কত ছিল তার কোন দালিলিক প্রমাণ নেই। বাংলা একাডেমির মুক্তিযুদ্ধ প্রকল্পে আমরা দুই লাখ ৬ হাজার ২৮ জনের একটি তালিকা করেছিলাম। এর আগে ও পরে কয়েকটি তালিকা হয়েছে। তবে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক রয়েই গেছে। কোন তালিকাই নির্ভুল হয়নি। রাজাকার কিংবা শহীদ বুদ্ধিজীদেরও কোন তালিকা নেই। এখন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের সমন্বিত ইতিহাস সঠিকভাবে সংকলন করে তা প্রকাশ বা সংরক্ষণের ব্যবস্থা কোন সরকারই করেনি।

অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধার চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘গেল এক/দেড় বছর আইনি জটিলতায় এই কার্যক্রম বন্ধ ছিল। আগামী জানুয়ারি থেকে যাচাইবাছাই শুরু হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি একটি নির্ভুল ও গ্রহণযোগ্য তালিকা তৈরির। ফেব্রুয়ারির মধ্যে আমাদের কাছে একটি খসড়া তালিকা চলে আসবে। ওই তালিকাটি আরও ভালোভাবে যাচাইবাছাই শেষে চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন করা হবে। আশা রাখি স্বাধীনতা দিবসের মধ্যেই তালিকা প্রকাশ করতে পারবো।’

আট বছর আগে বর্তমান সরকার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার তালিকা চূড়ান্তের কাজ শুরু করে, যা এখনও চলছে। বর্তমানে জাতির এই বীর সন্তানদের সংখ্যা এক লাখ ৭৭ হাজার ৭২৬ জন হলেও প্রথম তালিকানুযায়ী এই সংখ্যা মাত্র ৭০ হাজার। প্রায় দেড় লাখ সনদ ও আবেদন যাচাই বাছাই করে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের কাজ শুরু হচ্ছে আগামী মাসে।

সর্বজনগৃহীত ও বিতর্কহীন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার চূড়ান্ত তালিকা আগামী বছর স্বাধীনতা দিবসের (২৬ মার্চ ২০১৭) আগেই প্রকাশ করা হবে বলে সংবাদকে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী। মুক্তিযোদ্ধা ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যারা বিজয় ছিনিয়ে আনলো নিজেদের স্বার্থে তালিকার নামে প্রতিবারই তাদের সংখ্যা বাড়িয়েছে প্রতিটি সরকার। বিজয়ের এই সুদীর্ঘ সময়েও তালিকা চূড়ান্ত না হওয়া যেমন হতাশার তেমনি লজ্জারও। মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা এত বেশি (প্রায় সাড়ে তিন লাখ- বর্তমান ও আবেদনকারীর সংখ্যা একত্রে) নয় বলেও মনে করছেন তারা। দ্রুত চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের কথা বললেও তা যেন নির্ভুল ও বিতর্কহীন হয় সেদিকটার ওপর বেশি জোর দিচ্ছেন তারা।মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় থেকে ২০১৬ সালের অক্টোবর-ডিসেম্বর তিন মাসের ভাতা বাবদ এক লাখ ৭৭ হাজার ৭২৬ জনের অর্থছাড় করা হয়েছে। অর্থাৎ সরকার কর্তৃক বর্তমান স্বীকৃত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা এটি। তবে মুক্তিযোদ্ধা ট্রাস্ট প্রণীত তালিকায় ভারতে ট্রেনিংপ্রাপ্ত সাধারণ মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৬৯ হাজার ৫০৯ জন। এরশাদের শাসনামলে ’৯৬ সালে প্রণীত প্রথম সম্মিলিত তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা এক লাখ দুই হাজার ৪৫৮ জন। ১৯৯৩-৯৪ সালে বিএনপি সরকারের আমলে কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের নির্বাচনের জন্য প্রণীত তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা প্রায় ৮৮ হাজার। ১৯৯৭-২০০০ সালে প্রণীত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের লাল বই তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা এক লাখ ৫৪ হাজার। ২০০২ সালে জোট সরকারের গঠিত জাতীয় কমিটির অনুমোদিত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল দুই লাখ ১০ হাজার ৫৮১ জন। বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে তালিকা সংশোধন শুরু করে ২০১২ সালে দুই লাখ নয় হাজার জনের নাম দিয়ে একটি তালিকা প্রকাশ করে। কিন্তু পরে বিভিন্ন সময়ে সচিব ও সরকারি কর্মকর্তাদের ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ পাওয়ায় আবারও তালিকা হালনাগাদের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত আবারও গেজেটভুক্তির আবেদন করতে বলা হয়। তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করেন এক লাখ ৩৬ হাজার। ২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে তালিকা প্রকাশের কথা বলেছিলেন মন্ত্রী। তা না হওয়ায় ২০১৫ সালের স্বাধীনতা দিবসে তা প্রকাশের কথা বলেন মন্ত্রী। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে চলতি বছরের বিজয় দিবসেও তা সম্ভব হয়নি। তবে দু/তিন মাস আগে আইনি জটিলতা কাটিয়ে আবারও তালিকা চূড়ান্ত করার কাজ শুরু হচ্ছে।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, জানুয়ারি মাসে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু হবে। ছয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটি এই কাজ করবে। ভারতীয় তালিকাভুক্ত ও ২০০১ সালে লাল মুক্তিবার্তায় যাদের নাম আছে তারা বাদে যারা মুক্তিযোদ্ধা সনদের জন্য আবেদন করেছেন তাদের তালিকা যাচাই-বাছাই করা হবে। ৫৫ হাজার গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে। এছাড়া অনলাইনে প্রায় লক্ষাধিক আবেদন রয়েছে। এদের তালিকা যাচাই-বাছাই করা হবে। জানুয়ারি মাসের ৭, ১৪, ২১, ২৮ প্রতি শনিবার ও ফেব্রুয়ারির ৪ শনিবার স্ব-স্ব উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম চলবে। তাদের তালিকা আরও অধিকতর নিশ্চিত হয়ে প্রকাশ করা হবে চূড়ান্ত প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার তালিকা।

মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতির জন্য বর্তমানে আরও প্রায় এক লাখ ৩৬ হাজার আবেদন রয়েছে। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের আগে এই আবেদনগুলোর সঙ্গে ৫৫ হাজার গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার সনদও যাচাই-বাছাই হবে। বর্তমান এক লাখ ৭৭ হাজারের সঙ্গে যদি যাচাই-বাছাই শেষে লক্ষাধিক তালিকাভুক্ত হন তাহলে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে প্রায় তিন লাখ।

মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমীন আহম্মদ চৌধুরীর জীবদ্দশায় দেয়া সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, ভারতের ৮২টি প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে মোট এক লাখ ৩২ হাজার এফএফ প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। আর সামরিক বাহিনীর যোদ্ধার সংখ্যা ছিল ১৭ হাজারের কিছু বেশি। এর বাইরে দেশের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধরত বিভিন্ন বাহিনীর সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি হবে না।

সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের ‘মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধকৌশল ও সামরিক শক্তিবিন্যাস’ শিরোনামের নথি থেকে জানা যায়, ’৭১ সালে প্রবাসী সরকার গঠিত হওয়ার পর কলকাতার ৮ নম্বর থিয়েটার রোডের বাড়িতে মুক্তিযুদ্ধের পরিকল্পনা নির্ধারণে ১১ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত একটি কর্মশালা হয়। এতে গোটা দেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে পরিকল্পনা ঠিক করা হয়। সেক্টর বাহিনীর (সেনা, নৌ, বিমান, ইপিআর, পুলিশ) মোট সদস্য করার পরিকল্পনা করা হয় ১৮ হাজারের কিছু বেশি। আর গেরিলা সদস্য নিয়োগের পরিকল্পনা করা হয় মোট এক লাখ ৪৩ হাজার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এত নিয়োগ সম্ভব হয়নি।

মুক্তিযুদ্ধকালীন ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের বিশেষ গেরিলা বাহিনীর অন্যতম সংগঠক পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এত বার তালিকা পরিবর্তন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অসম্মানজনক। মনে হচ্ছে এই তালিকা নিয়ে ছেলেখেলা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার ক্ষমতায় থেকেও গেল আট বছরেও এই তালিকা চূড়ান্ত করতে পারলো না। এর চেয়ে বেশি হতাশার আর কী হতে পারে। এই তালিকা চূড়ান্ত করার কাজ দ্রুত শেষ করার কথা বলেন তিনি। তবে অবশ্য তা যেন সঠিক হয়।



এ পাতার আরও খবর

ভূমি খেকো ভুয়া ডিগ্রীধারী সাদী-উজ-জামানের হাজার কোটি টাকার মিশন! ভূমি খেকো ভুয়া ডিগ্রীধারী সাদী-উজ-জামানের হাজার কোটি টাকার মিশন!
দুর্নীতির বাদশা বিআইডব্লিউটিএর সহকারী প্রকৌশলী জালাল গংদের দুর্নীতি রুখবে কে? দুর্নীতির বাদশা বিআইডব্লিউটিএর সহকারী প্রকৌশলী জালাল গংদের দুর্নীতি রুখবে কে?
সদ্য অবসরে যাওয়া মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফার বিপুল সম্পদের মালিকানা নিয়ে রহস্য (পর্ব-২) সদ্য অবসরে যাওয়া মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফার বিপুল সম্পদের মালিকানা নিয়ে রহস্য (পর্ব-২)
হাসিনা ফ্যাসিস্ট নন, বরং প্রতিশ্রুতিতে ব্যর্থ গণতান্ত্রিক শাসক” — তসলিমা নাসরীন হাসিনা ফ্যাসিস্ট নন, বরং প্রতিশ্রুতিতে ব্যর্থ গণতান্ত্রিক শাসক” — তসলিমা নাসরীন
আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ তিতাস গ্যাস পিয়ন হেলাল কি আইনের ঊর্ধ্বে? আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ তিতাস গ্যাস পিয়ন হেলাল কি আইনের ঊর্ধ্বে?
বালাগঞ্জ-গহরপুরে রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের স্বপ্নের মেগা প্রকল্প বালাগঞ্জ-গহরপুরে রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের স্বপ্নের মেগা প্রকল্প
রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত
বেতন-বোনাস’র টাকায় তিতাস গ্যাস পিয়ন হেলাল’র কয়েক কোটি টাকার সম্পদ বেতন-বোনাস’র টাকায় তিতাস গ্যাস পিয়ন হেলাল’র কয়েক কোটি টাকার সম্পদ
“সাম্রাজ্যবাদের পুতুল নয়, প্রকৃত জনগণের সরকার চাই”-বামপন্থী নেতা মোশরেফা মিশু “সাম্রাজ্যবাদের পুতুল নয়, প্রকৃত জনগণের সরকার চাই”-বামপন্থী নেতা মোশরেফা মিশু
ভূমি সেবা সত্যিকারার্থে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে: ভূমি সচিব ভূমি সেবা সত্যিকারার্থে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে: ভূমি সচিব

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)