শিরোনাম:
ঢাকা, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

Daily Pokkhokal
মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪
প্রথম পাতা » অপরাধ | জেলার খবর » মাদকের ভয়াল থাবায় ক্ষত-বিক্ষত কুমিল্লার তরুণ ও যুবসমাজ
প্রথম পাতা » অপরাধ | জেলার খবর » মাদকের ভয়াল থাবায় ক্ষত-বিক্ষত কুমিল্লার তরুণ ও যুবসমাজ
৪৩৪ বার পঠিত
মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

মাদকের ভয়াল থাবায় ক্ষত-বিক্ষত কুমিল্লার তরুণ ও যুবসমাজ

---কুমিল্লা প্রতিনিধি:
ইয়াবা ও ফেনসিডিলের ভয়ঙ্কর জালের ভয়াল থাবায় ক্ষত-বিক্ষত কুমিল্লার তরুণ ও যুবসমাজ। মাদকের এ আগ্রাসন থেকে রেহাই মিলছে না এখানকার উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নিন্ম শ্রেণির মাদকসেবিদের। কুমিল্লায় গত ১১ মাসে মাদকদ্রব্য উদ্ধারাভিযানে পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, ডিবি, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং হাইওয়ে পুলিশ (পূর্বাঞ্চল) বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্যের মধ্যে উত্তেজক ট্যাবলেট, গাঁজা, মদ, বিয়ার, ইনজেকশন ছাড়াও প্রায় ৫০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং সাড়ে ২৫ হাজার বোতল ফেনসিডিল সিরাপ উদ্ধার করেছে। আর মাদক বিক্রেতা ও পাচারকারিদের মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে ২হাজার ৪০৯জন। আইন প্রয়োগকারি ওইসব সংস্থা থেকে মাদক আইনে মামলা করা হয়েছে ২হাজার ১০টি। তারপরও কুমিল্লার আইন-শৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনীর থাবাতেও কমছে না ইয়াবা ফেনসিডিলসহ নানা প্রকার মাদকদ্রব্যের অনুপ্রবেশ।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, ডিবি, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং হাইওয়ে পুলিশের মধ্যে ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্যের মধ্যে ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারে শীর্ষে রয়েছে জেলা পুলিশ। আর ফেনসিডিল উদ্ধারে শীর্ষে রয়েছে বিজিবি ১০ ব্যাটালিয়ন। তবে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কুমিল্লা অঞ্চল ও হাইওয়ে পুলিশ (পূর্বাঞ্চল) ফেনসিডিল ও ইয়াবা উদ্ধারে তেমন ভূমিকা রাখতে পারেনি। কুমিল্লা জেলা পুলিশ গত ১১মাসে ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে ৩০হাজার ৩৫৯ পিস। ফেনসিডিল সিরাপ উদ্ধার করেছে ৬হাজার ৫৬০ বোতল। বিজিবি ১০ ব্যাটালিয়ন ফেনসিডিল সিরাপ উদ্ধার করেছে ১১হাজার ৫৫১ বোতল। তবে ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার হয়েছে মাত্র ২৬৭টি। অন্যদিকে র‌্যাব-১১এর সিপিসি-২ কুমিল্লা ক্যাম্প গত ১১ মাসের মধ্যে ৭মাসে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে ৮হাজার ১৪৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ৩হাজার ৮৬৪ বোতল ফেনসিডিল সিরাপ উদ্ধার করেছে। নারায়নগঞ্জের ঘটনার পর এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত র‌্যাবের কার্যক্রম অফিসিয়ালি শিথিল রাখা হয়েছিল। সেপ্টেম্বরে র‌্যাব ৭হাজার ২২৫ পিসের ইয়াবার বড় চালান উদ্ধার করেছিল।

কুমিল্লা ডিবি (গোয়েন্দা) পুলিশের উদ্ধার তালিকায় রয়েছে ইয়াবা ট্যাবলেট ১০হাজার ৪৮৫ পিস ও ফেনসিডিল সিরাপ ৩ হাজার ৪৫৫ বোতল। ইয়াবা উদ্ধারে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে কুমিল্লা ডিবি পুলিশ। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কুমিল্লা অঞ্চল বছরের ১১মাসের মধ্যে মার্চে ৩২ বোতল ফেনসিডিল ও ইয়াবা ১৯০ পিস, মে মাসে ১০০ পিস ইয়াবা, আগষ্টে ১০ বোতল ফেনসিডিল, সেপ্টেম্বরে ২৫ বোতল ফেনসিডিল, অক্টোবরে ৩৩ বোতল ফেনসিডিল এবং ১৮ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে। ইয়াবা, ফেনসিডিল উদ্ধারে সংস্থাটির আশানুরূপ সাফল্য না থাকলে ডিনেচার্ড স্প্রিট, গাঁজা, বিয়ার, জাওয়া, এসকাফ সিরাপ, চোলাই মদ, উত্তেজক সিরাপ, ট্যাবলেট মোটামটি ভালোই উদ্ধার করেছে। তবে বছরের কেবলমাত্র নভেম্বর মাসে হাইওয়ে পুলিশ (পূর্বাঞ্চল) মাত্র ১০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে।

কুমিল্লায় মাদক পরিস্থিতি কতোটা ভয়াবহ তা ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত অন্তত দশ ধরণের আটক মাদকদ্রব্যের মধ্যে কেবলমাত্র ইয়াবা ও ফেনসিডিলের উদ্ধার অভিযানেই তা অনুমান করা যায়। কুমিল্লায় বর্তমানে মাদক নির্ভরতাদের মধ্যে বেশিরভাগই ইয়াবা ও ফেনসিডিলসেবি। গন্ধবিহীন সিরাপ ফেনসিডিলের পাশাপাশি ইয়াবা নামের গোলাপি রংয়ের গোলাকার ছোট ট্যাবলেট এখন সমাজের উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত পর্যায়ের তরুণ, যুবক ও কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছেও প্রিয় নেশায় পরিগণিত হয়েছে। ইয়াবাসেবিদের কাছে এটি এখন বাবা নামেও পরিচিতি পেয়েছে। আশ্চার্যের বিষয়, সমাজের নিন্ম শ্রেণির বিভিন্ন পেশার উঠতি বয়স থেকে শুরু করে বয়স্কদের একটি অংশ পর্যন্ত ইয়াবার ছোবলে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইয়াবার ছোট বড় চালান আগে টেকনাফ, কক্সবাজার, চট্রগ্রাম হয়ে কুমিল্লার মাদক ব্যবসায়িদের হাতে পৌঁছলেও বর্তমানে ভারত থেকে ফেনসিডিলের পাশাপাশি কুমিল্লা সীমান্তের কয়েকটি রুটে ইয়াবা ট্যাবলেট মুড়ি-মুড়কির মতো আসছে। বিশেষ করে সীমান্তের ১২৫ কিলোমিটারের মধ্যে কাঁটাতারবিহীন বড়জ্বালা, বিবির বাজার, বৌয়ারা, যশপুর, মথুরাপুর, আমানগন্ডা ও চৌদ্দগ্রামের প্রায় সাড়ে ১১ কিলোমিটার অংশ অরক্ষিত থাকায় এসব স্থান দিয়ে ভারত থেকে অনাসায়ে ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন প্রকারের মাদকদ্রব্য কুমিল্লায় আসছে। মাদক পাচারকারি ও চোরাকারবারিদের কাছে কাঁটাতারবিহীন এলাকাগুলো তাদের কাজের জন্য নিরাপদ ট্রানজিট হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কুমিল্লার পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী বলেন, মাদকদ্রব্য উদ্ধার এবং মাদক বিক্রেতা ও পাচারকারিদের গ্রেফতারে থানা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশের নিয়মিত অভিযান চলছে। মাদকের বিষয়ে কোন ছাড় নেই। পুলিশের অভিযানের পাশাপাশি সামাজিক প্রতিরোধ আন্দোলন মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ১০ রাইফেল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্ণেল জাকির হোসেন বলেন, কুমিল্লায় মাদকসেবি ও ব্যবসায়ির সংখ্যা অনেক বেশি। সীমান্ত এলাকার অধিবাসীদের মাদকের বিরুদ্ধে সচেতন করে তোলতে পারলে মাদকের অনুপ্রবেশ অনেকটা ঠেকানো সম্ভব। আর বিশেষ করে আমরা মাদকের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স দেখাচ্ছি। পুরো সীমান্তেই আমাদের টহল ব্যবস্থা জোরদার রয়েছে।



এ পাতার আরও খবর

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট: গণতন্ত্রের সংকট ও জনগণের প্রত্যাশা বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট: গণতন্ত্রের সংকট ও জনগণের প্রত্যাশা
ইরানের পরমাণু ঘাঁটিতে ইজরায়েলের হামলা! জারি জরুরি অবস্থা, উত্তাল বিশ্বরাজনীতি ইরানের পরমাণু ঘাঁটিতে ইজরায়েলের হামলা! জারি জরুরি অবস্থা, উত্তাল বিশ্বরাজনীতি
ইউনূসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক  অপরাধ আদালতে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি ইউনূসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি
তিতাস গ্যাস খেকো প্রকৌশলী সিদ্দিকুর’র হাতে দুর্নীতির রহস্যময় যাদুর কাঠি তিতাস গ্যাস খেকো প্রকৌশলী সিদ্দিকুর’র হাতে দুর্নীতির রহস্যময় যাদুর কাঠি
গুম ফিরে আসা সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল’র বাক স্বাধীনতা হরণ গুম ফিরে আসা সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল’র বাক স্বাধীনতা হরণ
শফিকুল ইসলাম কাজলের ফেসবুক আইডি বন্ধ: বাকস্বাধীনতা হরণের আরেকটি উদাহরণ শফিকুল ইসলাম কাজলের ফেসবুক আইডি বন্ধ: বাকস্বাধীনতা হরণের আরেকটি উদাহরণ
সন্দেহজনক লেনদেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের  উত্তর না পাওয়াতে আমার জিজ্ঞাসা?  সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল সন্দেহজনক লেনদেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর না পাওয়াতে আমার জিজ্ঞাসা? সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল
নূর আলী ও ইউনিক গ্রুপ: কর্পোরেট ক্ষমতার ছায়ায় দুর্নীতির অভিযোগ নূর আলী ও ইউনিক গ্রুপ: কর্পোরেট ক্ষমতার ছায়ায় দুর্নীতির অভিযোগ
দুর্নীতির বরপুত্র ওসি মোজাম্মেল’র  জোর কোথায়? পর্ব-৩) দুর্নীতির বরপুত্র ওসি মোজাম্মেল’র জোর কোথায়? পর্ব-৩)
পাপিয়া কেলেঙ্কারি ও গুমের অভিযোগ: নূর আলীর ষড়যন্ত্র ও শেখ হাসিনার সরকারের ভূমিকা পাপিয়া কেলেঙ্কারি ও গুমের অভিযোগ: নূর আলীর ষড়যন্ত্র ও শেখ হাসিনার সরকারের ভূমিকা

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)