
শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » বাংলাদেশ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান দোহা হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সফরে
বাংলাদেশ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান দোহা হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সফরে
পক্ষকাল /নর্থ নিউজ ঃ
বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান শনিবার দোহা হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। এ সফরে তিনি ২৬ জুলাই বাংলাদেশ সময় ভোরে ক্যাটার এয়ারওয়েজের QR-639 ফ্লাইটে দোহার জন্য উড়ান ভরিয়েছেন।
দফায় দফায় এই সফর “সরকারি সফর” হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুসের অফিস ২৪ জুলাই একটি আদেশ জারি করে জানায়, খলিলুর রহমান ২৬ জুলাই থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকবেন।
সফরের এই পর্যায়ে তিনি উচ্চস্থ US কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে। মিশন শেষে তিনি ৫ আগস্ট ঢাকায় ফেরার প্রত্যাশা করছেন।
প্রায় দুই মাসের ব্যবধানে এটি তার দ্বিতীয় দফার সফর। মে মাসে একই ফ্লাইটে দোহা গিয়েছিলেন তিনি, যেখানে US সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে sensitive বিষয় নিয়ে ব্রিফিং নিয়ে এসেছিলেন।
মে মাসের সফরে রখাইন পরিস্থিতির “মানবিক করিডোর” উদ্যোগ ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। সেনাবাহিনী, বিশেষ করে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের তীব্র আপত্তির মুখে এই প্রস্তাব থেকে সরে আসতে হয় খলিলুর রহমানকে। এর পর আর এ নিয়ে কোনও প্রকাশ্য বক্তব্য দেননি তিনি।
তবে রখাইন সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে নীরব থাকলেও ১৫ জুলাই ঢাকা তেজগাঁওয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ইউ কিউ সো মে-র সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছিল।
বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এই সফর রখাইন রাজ্যে আরাকান সেনাবাহিনীকে সহায়তার যে অভিযানের প্রস্তুতি, তারই অংশ হিসেবে ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
খলিলুর রহমানের মার্কিন সফর
বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের এই সফরের প্রধান লক্ষ্য হলো দু’দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে অন্তর্নিহিত সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করা। যুক্তরাষ্ট্রের অভিন্ন নিরাপত্তা স্বার্থ, সাইবার-সিকিউরিটি, জলবায়ু নিরাপত্তা এবং ঊন灰 প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
সম্ভাব্য আলোচনা বিষয়সূচি
দুই দেশের মধ্যে মহড়া ও যৌথ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বৃদ্ধির সুযোগ
সাইবার-হুমকি মোকাবেলায় ইন্টেলিজেন্স শেয়ারিং ফ্রেমওয়ার্ক
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এবং মানবিক সহায়তার ত্রিমুখী সমন্বয়
জলবায়ু পরিবর্তনের পরিণতি - সামরিক ও বেসামরিক প্রস্তুতি
আফগানিস্তান, মিয়ানমার ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ
আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি
তারিখ সময় কর্মসূচির বিবরণ
জুলাই ২৬ দুপুর ২:০০ হোয়াইট হাউস জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠক
জুলাই ২৭ সকাল ১০:৩০ স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতিরক্ষা সহকারী সচিবের সাথে সাক্ষাৎ
জুলাই ২৮ বিকেল ৪:০০ পেন্টাগনে প্রতিরক্ষা সচিবের সঙ্গে ক্যাপিটল হিল মিটিং
জুলাই ২৯ সকাল ৯:০০ ওয়াশিংটন থিঙ্কট্যাঙ্ক (CSIS/CFR) প্যানেল ডিসকাশন
জুলাই ৩০ সন্ধ্যা ৭:০০ বাংলাদেশের দূতাবাস আয়োজিত ডিনার ও সাইবার সিকিউরিটি ওয়ার্কশপ
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও মানবিক বিষয়
গত সফরে মানবিক করিডর প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে ইউএসএ, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় পদ্ধতিতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া মসৃণ করতে কাজ চলছে।
নিরাপত্তা নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক পরামর্শ
স্থানীয় পর্যায়ে পুনর্বাসন সাইট নির্মাণ পরিকল্পনা
আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশন ও পুনর্বাসন পরবর্তী আর্থ-সামাজিক সহায়তা
প্রত্যাশিত ফলাফল ও চ্যালেঞ্জ
নিরাপত্তা চ্যানেল বিস্তারে সমঝোতা স্মারক (MOU) স্বাক্ষর
সাইবার-ইন্টেলিজেন্স ভাগাভাগিতে বিনিময়
জলবায়ু-সামরিক রূপান্তরে টেকসই পরিকল্পনা
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে পর্যবেক্ষক মিশন গঠন
অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ও বিদেশ নীতিকে সামঞ্জস্য করার প্রয়োজনীয়তা
স্থানীয় মিডিয়া ও নাগরিক সমাজের নেটওয়ার্ক এ সফরকে স্বাগত জানালেও, রাজনৈতিক বিরোধীরা তা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলতে পারেন-বিশেষ করে নিরাপত্তা চুক্তি ও প্রতিরক্ষা সামগ্রীর আমদানি সম্পর্কে। বিদেশ নীতিতে স্বতন্ত্র ভূমিকায় আমেরিকার প্রভাব নিয়ে পর্যালোচনা হবে অবশ্যম্ভাবী।
নিরাপত্তা সহযোগিতা: প্রসারিত বিস্তারিত
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র যৌথ নিরাপত্তা সহযোগিতার মধ্যে বেশ কয়েকটি স্তর এবং ক্ষেত্র অন্তর্ভুক্ত। এতে কেবল যুদ্ধ প্রস্তুতি নয়, বরং বন্যা, তুর্কী সামরিক, সাইবার, এয়ার স্পেস মনিটরিং-সবই আসে।
ইন্টেলিজেন্স শেয়ারিং এবং যোগাযোগ
স্থায়ী হটলাইন সুবিধা: পেন্টাগন ও বিসিএসআইএসের (CSIS) মধ্যকার ২৪/৭ যোগাযোগ চ্যানেল
সাইবার-ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম: সাইবার-হুমকি শনাক্ত ও প্রতিরোধে রিয়েল-টাইম ডেটা বিনিময়
দ্বিপাক্ষিক সিট্রিক্যাল সিগন্যাল প্রটোকল: সংকেত-গোপনীয়তা রক্ষা করে দ্রুত সংকেত আদানপ্রদান
যৌথ সামরিক মহড়া ও প্রশিক্ষণ
সমুদ্র এবং নদীমাতৃক অপারেশন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, কস্ট-গার্ড অপারেশনে সমন্বিত প্রদর্শনী
হাই-ইন্টেনসিটি যুদ্ধ পরিস্থিতি: এয়ার-ল্যান্ড কোঅপারেশন পর্ব
প্যারামিলিটারী সাপোর্ট ইউনিট প্রশিক্ষণ: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, নাশকতা প্রতিরোধ
নিয়মিত নিরাপত্তা বৈঠক
সালান বৈঠক: নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
টেকনিক্যাল ওয়ার্কিং গ্রুপ: জলবায়ু ও সাইবার সেক্টরে বিশেষজ্ঞ পর্যায় আলোচনা
জলবায়ু পরিবর্তনের সামরিক প্রস্তুতি
জলবায়ু ঝুঁকি শুধু পারমাণবিক অস্ত্র বা সাইবার আক্রমণ নয়; বরং বন্যা, শক্তি সংকট, শর্টেজ-সবকিছুই সামরিক স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করে।
ঝুঁকি মূল্যায়ন ও পরিকল্পনা
প্রথম ধাপে সামরিক ইউনিটগুলো কর্মপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করে:
ভবিষ্যৎ জরিপ: উচ্চ সমুদ্রপৃষ্ঠ, অতিবৃষ্টিপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করা
ইনফ্রা স্ট্রাকচার রোবস্টনেস: বেস ক্যাম্প, আর্টিলারি অবস্থান জলবায়ুপ্রবণ বৃদ্ধি মোকাবেলা করবে এমনভাবে নির্মাণ
লাইভন্ট পরিবেশ পর্যবেক্ষণ: সেনসর ও ড্রোন দিয়ে জলবায়ু-সিগন্যাল শনাক্ত
বিশেষায়িত ইউনিট ও প্রশিক্ষণ
ডিজাস্টার রেসপন্স ব্রিগেড: বন্যা-ভূমি উদ্ধার, মেডিক্যাল ইকুইপ-সহ
গ্রীন লজিস্টিক্স স্কোয়াড: জ্বালানি সচেতনতা, নবায়নযোগ্য ইন্ধন ব্যবহারে দক্ষতা
হাইব্রিড মহড়া: জলবায়ু ও সাইবার হামলার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ
নিরাপত্তা চ্যানেল বিস্তারে সমঝোতা স্মারক (Memorandum of Understanding)
MoU হচ্ছে দুই দেশের মধ্যকার আনুষ্ঠানিক চুক্তি, যা নিরাপত্তা সহযোগিতাকে কাঠামোবদ্ধ করে।
উদ্দেশ্য
সর্বস্তরের নিয়মিত যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা
ইন্টেলিজেন্স, প্রশিক্ষণ ও লজিস্টিক সাপোর্টে মুল্যবদ্ধ অঙ্গীকার
হাইপোথেটিক্যাল সঙ্কট ব্যবস্থাপনায় একসঙ্গে কাজ
প্রধান উপাদান
যোগাযোগ প্রটোকল হটলাইন নম্বর, ফ্রিকোয়েন্সি, পাসকোড মেকানিজম
তথ্য ও ডেটা শেয়ারিং কাঠামো এনক্রিপ্টেড প্ল্যাটফর্ম, ডাটা স্টোরেজ সময়সীমা, শর্তাবলী
সম্মিলিত মহড়া ও প্রশিক্ষণ বার্ষিক সময়রেখা, সুযোগ-সুবিধা, ফান্ডিং মডেল
লজিস্টিক সাহযোত্র ইকুইপমেন্ট লেনদেন, অস্থায়ী বেস স্টেশন স্থাপন
সমন্বিত পর্যবেক্ষণ বহিরাগত পর্যবেক্ষক, রিপোর্টিং ফ্রিকোয়েন্সি
সম্ভাব্য অঙ্গীকার
যৌথ ইন্টেলিজেন্স প্রোটোকল লঞ্চ
বছরে দুইটি কমপ্লেক্স মহড়া (একটি জলবায়ু-সাইবার হাইব্রিড)
ত্রিমুখী পর্যবেক্ষণ টিম (বাংলাদেশ, ইউএস, আন্তর্জাতিক সংস্থা)
পরবর্তী ধাপ
উভয় সরকারের স্বীকৃতি এবং আইনগত অনুমোদন
পরীক্ষা চলাকালীন পাইলট প্রোগ্রাম চালু
পূর্ণাঙ্গ কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করে MoU স্বাক্ষর
মনিটরিং ও মূল্যায়ন ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি