ডক্টর ইউনুসকে নিয়ে হাবিলদার আবু তৈয়ব এর বয়ান
পক্ষকাল সংবাদ ডেস্ক :
ড.ইউনুস যেদিন নোবেল পান,সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার,কোনো ছাত্র সংগঠন
ঢাবিতে আনন্দ মিছিল করেননি। আমার ডাকে এবং আমার নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল হয়েছিলো।
ড ইউনুসের নোবেল বিজয়ের আনন্দ মিছিল। ক্যাম্পাসের ডান বাম সকল সংগঠনের বিরাগভাজনের শিকার ও হয়েছিলাম আমি আবু তৈয়ব হাবিলদার।
সেই ইউনুস সাহেবের সরকারের ১০ মাসের বিতর্কিত নানা কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আমার কথা বলতে হচ্ছে। ভাবতে ও আজ আমার লজ্জা লাগে।
আমি শুধু নয় সবাই মনে করেছিলাম সৎ
যোগ্য,দক্ষ ও স্বৈরাচার হাসু বিরোধী দীর্ঘ
আন্দোলনের বিপ্লবী চেতনা সম্পন্ন,
পরিক্ষিত লোকজন নিয়ে তিনি শক্তিশালী
সরকার গঠন করবেন। কিন্তু তিনি এমন লোকজন বাটপারদের নিয়ে অবিপ্লবী সরকার গঠন করলেন,যারা দেশের শাসন
ব্যবস্থা পরিচালনায় অনেকটা অক্ষম।
যার প্রমান বিগত ১০ মাস।
একটা সফল গণঅভ্যুত্থান বা বিপ্লবের পরে যে বিপ্লবী সরকার গঠন অনিবার্য। সেটা তিনি ৮ আগষ্ট ভুলে গেলেন। এনজিও ব্যবসায়ী,আওয়ামী লীগের সচিব,নিজের
বান্ধবী,নিজের পরিবারের ডাক্তার,নিজের বন্ধু বান্ধব,চামচা,নিজের ভাতিজা,গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মচারী,আমেরিকা-ভারত ও আওয়ামী লীগের সাচ্চা কিছু দালাল
নিয়ে,সরকার গঠন করে,আমরা আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী,সকল আন্দোলনকারী ও দেশকে মহা ফ্যাসাদের মধ্যে ফেলে দেবেন সেটা আমরা কেউই কল্পনা করেনি।
এরকম গণবিদ্বেষী উপদেষ্টাদের নিয়ে সরকার গঠন করে একটা মহান গণ অভ্যুত্থানের গণ স্পিরিটকে এতো দ্রুত ধ্বংস করে দিবেন তা ছিলো সকলের কল্পনাতীত।
সরকার গঠনের পরপরই গণ অভ্যুত্থানকারী ছাত্র জনতাকে শতধা বিভক্ত,বিচ্ছিন্ন করে দেয়া। ছাত্রনেতাদেরকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া বা তারা নিজে নিজেই আমাদের
কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া,আওয়ামী
বিরোধী সকল ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে
একের বিরুদ্ধে অন্যকে ঝগড়াঝাটিতে
লাগিয়ে দিয়ে,শত্রুতামীর সুযোগ করে দেয়া,রাজনৈতিক দলগুলোকে একে অপরের বিরুদ্ধে অমর্যাদারকর অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি করা।
এসব কিছুই ইউনুস সরকারের ৯৫ ভাগ উপদেষ্টাদের ষড়যন্ত্রের অংশ।
শুরুতেই বিপ্লবী সরকার গঠন না করা,পঁচা গলা সংবিধানের অধীনে শপথ গ্রহণ করে, জনগনের ছুড়ে ফেলা পুরনো স্বেচ্ছাচারী,
স্বৈরাচারী,গণবিরোধী সংবিধানকে জিঁয়ে রাখা,আওয়ামী ও ভারতীয় দালাল রাষ্ট্রপতি চুপ্পুকে না সরানো (আমি নিজেই
বংগ ভবনের সামনে অনশন অবস্থান কর্মসূচী পালন করে চুপ্পুকে সরানোর দাবীতে পাবলিক জড়ো করেছিলাম বংগভবনের সামনে।
ড ইউনুস সাহেব আমাদের,জনগণের কারো কথা রাখলেন না। তিনি রাখলেন ভারতীয় অনুচর আসিফ নজরুলের কথা,চুপ্পুকে না সরিয়ে পুরো রাষ্ট্রকে তিনি ঝুঁকির মধ্যেই ফেলে দিলেন।
আওয়ামী ফ্যাসিবাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক
আওয়ামী লুটেরা সচিবদের সচিবালয় থেকে না সরিয়ে,উল্টো পদ পদায়নে পুরুষকৃত করে এই ১০ মাস জগাখিচুড়ি সরকার চালালেন। এখন সেইসব সচিবদের সরানোর কথা বলছেন সচিবালয়ে গ্যাঞ্জাম লেগে যাবার পরে।
অথচ টানা ৪ মাস আমি সচিবালয়ের ভিতরে,মন্ত্রী পরিষদের কেবিনেট সচিবের কাছে,প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে অনেকবার আবেদন জমা দিয়েছি।
সচিবালয়ের গেইটে কয়েকবার সমাবেশ করেছি আওয়ামী দূর্ণীতিবাজ আমলাদের
অপসারণের দাবীতে প্রেসক্লাব,শাহবাগ,
টিএসসিতে বহুবার সমাবেশ করে তাদের অপসারণের দাবী তুলেছি,৫০ এর বেশী উরাধুরা বক্তব্য দিয়ে সতর্ক করেছি।
কোনো কথা শুনেননি ইউনুস সাহেব ও তার মাজা ভাংগা উপদেষ্টাগণ। ১০ মাস পর ইউনুস সাহেবের ঘুম ভাঙলো,সচিবালয়ের আওয়ামী আমলাদের তিনি নাকি এখন সাইজ করবেন! আওয়ামী লীগের বিভিন্ন
পর্যায়ের আমলারা শত শত কোটি অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে গেলো,চেয়ারগুলো পাকাপোক্ত করলো তখন ঘুম নাকি ভেঙেছে ইউনুস সরকারের।
১০ মাসে সকল ক্ষেত্রেই ইউনুস সাহেবের সরকার আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করে,
রাষ্ট্রে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে,জাতীয় ঐক্য নষ্ট করে,রাজনৈতিক দলগুলোকে
শত্রু বানিয়ে,আন্দোলনেকারী সকল পর্যায়ের নেতৃত্বকে,সাধারণ জনগনকে
ব্যাপক ঝুকিতে ফেলে দিয়েছেন। সেনাবাহিনীকে সরকারের মুখোমুখি দাড় করিয়ে,আওয়ামী লীগ ও ভারতকে
মহা সুযোগ তৈরী করে দিলেন!
এর দায় পুরোপুরি আপনার,আপনার সরকারের।
আপনি ইউনুস সাহেবের সরকার হাসিনা ও ভারতের বিরুদ্ধে মুখরোচক বক্তব্য হাজারবার দিয়ে গেলেও ভারতের সাথে
খুনী হাসিনার কৃত দেশের সার্বভৌমত্ব বিরোধি প্রতিরক্ষা চুক্তি এখনো বাতিল করেন নি। ভারতের সেনাবাহিনী বাংলাদেশে ডুকে যাবার প্রতিরক্ষাচুক্তি
এখনো জন সম্মুখে হাজির করেন নি।
কেন?
১০ মাসেও কেন হাসিনার সাথে মোদীর করা ১০০ এর উপরে অসম চুক্তিগুলো জন সম্মুখে হাজির করেননি এবং বাতিল করেন নি।
আমরা এখন বুঝতে পারছিনা,আপনি ও
আপনার সরকার ভারতের পক্ষে কাজ করছেন নাকি আমরা করছি?
ইউনুস সরকার ভারত প্রশ্নে,জনগনকে ধোয়াশায় রেখে,জনমত না নিয়ে,
রাজনৈতিক আলোচনা না করে,
আমেরিকার সাথে প্রকাশ্যে এবং গোপনে দেশের সার্বভৌমত্ববিরোধী করিডোর চুক্তি,
চট্টগ্রাম বন্দর ও সেন্ট মার্টিন আমেরিকাকে সমর্পণ করার ফন্দি ফিকির,অপচেষ্টা করছেন?
ভারত ও আওয়ামী লীগের কবল থেকে
বাংলাদেশকে আমরা উদ্ধার করেছি,
চট্টগ্রাম বন্দর ও সেন্টমার্টিনকে আমেরিকার হাতে তুলে দেবার জন্যে নয়।
ড ইউনুস সাহেব বিদেশিদের সাথে আপনার প্রকাশ্য কিংবা গোপন এজেন্ডা থাকতে পারে কিন্তু আমাদের এজেন্ডা একটাই,দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব
রক্ষার এজেন্ডা। মা মাটি ও মোহনা রক্ষার লড়াইয়ে আমরা সদা অবিচল।
সাধু সাবধান!
আমার দেশের স্বাধীনতা,সার্বভৌমত্বের
প্রশ্নে কোনো বিতর্কিত ও দেশবিরোধী চুক্তি
হাসিনা করুক বা আপনি প্রফেসর ইউনুস
আমরা কাউকেই পরোয়া করি নাই এবং করবো না।
আমাদের জনগণের সামনে শত্রু হিসেবে ভারত দাড়ালে ও আমরা ফাইট দিয়েছি এবং দেবো। আমাদের সামনে শত্রু হিসেবে
আমেরিকা আসলে আমরা মাষ্টার দা সূর্যসেন হয়ে দাঁড়াবোই।
প্রয়োজনে হামাস-হুতি কিংবা হিজবুল্লাহ
হয়ে আমেরিকা+ঈসরায়েল-ভারতের বিরুদ্ধে খেলবো ইনশাল্লাহ।
আমার আপনার দেশকে,দেশের জনগণকে ভবিষ্যত ঝুঁকিতে ফেলবেন না দয়া করে।
আমরা আশা করছি,আপনি বাংলাদেশের
হয়ে কাজ করবেন। আমেরিকান ও ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের হয়ে নয়।
@highlight
প্রতিষ্ঠাতা
ও
সাবেক সভাপতি
চট্টগ্রাম ছাত্র ফোরাম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।