শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২

Daily Pokkhokal
বুধবার, ২২ নভেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | ব্যাংক-বীমা | ব্রেকিং নিউজ » খেলাপি ঋণের পাহাড়
প্রথম পাতা » অর্থনীতি | ব্যাংক-বীমা | ব্রেকিং নিউজ » খেলাপি ঋণের পাহাড়
৪২৪ বার পঠিত
বুধবার, ২২ নভেম্বর ২০১৭
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

খেলাপি ঋণের পাহাড়

---
পক্ষকাল সংবাদ ঃ
ব্যাংকিং খাতে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে চলেছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ। বলা হয়, খেলাপি ঋণের পাহাড় জমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, গত সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ৮০ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৬৫ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা, বা ২২ দশমিক ১৮ শতাংশ। তবে ঋণ অবলোপনসহ পুঞ্জীভূত খেলাপি ঋণ বেড়ে সোয়া লাখ কোটিতে ঠেকেছে, যা এক বছর আগে ছিল এক লাখ সাত হাজার কোটি টাকা।

খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকের আয় দিয়ে বেশি হারে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। অনেক ব্যাংকের আয় দিয়েও এটা কুলায়নি। ফলে বেড়ে গেছে প্রভিশন ঘাটতি। এতে ব্যাংকের প্রকৃত আয় কমে গেছে। যেমনÑ গত বছরের সেপ্টেম্বরে ব্যাংকিং খাতে প্রভিশন ঘাটতি ছিল পাঁচ হাজার ২৩২ কোটি টাকা, চলতি বছরের একই সময়ে তা বেড়ে হয়েছে ছয় হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা।

খেলাপি ঋণ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার কারণ ব্যাংকার ও বিশ্লেষকেরা নানাভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। কেউ বলেছেন, চলমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগ তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যেও স্থবিরতা অব্যাহত রয়েছে। এতে ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।

আবার কেউ বলছেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণখেলাপিদের ব্যাপকভাবে ছাড় দেয়া হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী ডাউন পেমেন্ট না দিয়েই অনেককেই ঋণ নবায়ন করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ না করার প্রবণতা বেড়ে গেছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, খেলাপি ঋণ আড়াল করতে আগের বছরে ঋণ নবায়নে বিশেষ ছাড় দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ওই সময়ে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র আসেনি। এবার খেলাপি ঋণ নবায়ন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী করতে হয়েছে। ফলে এবার খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র বের হয়ে গেছে। আর এতেই খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে গেছে।

তবে দেশের প্রথম প্রজন্মের একটি ব্যাংকের এমডি জানান, গত বছরের শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণ নবায়নের বিশেষ ছাড় দিয়েছিল। মাত্র এক বা দুই শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নবায়ন করেছিলেন বড় ঋণখেলাপিরা। এর বাইরে অন্যরাও বিশেষ ছাড় নিয়ে ঋণ নবায়ন করেছিলেন। কিন্তু ওই সব ঋণে বিশেষ সুবিধা নিলেও খেলাপিরা পরে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করেননি। ফলে ওই সব ঋণও আবার খেলাপি হয়ে যাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক খেলাপি ঋণে।

খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোর প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে বেশি হারে। আর বাড়তি প্রভিশন সংরক্ষণ করতে গিয়ে ব্যাংকগুলোর নিট মুনাফা কমে যাচ্ছে। আবার কোনো কোনো মুনাফার পুরোটা দিয়েও প্রভিশন ঘাটতি মেটানো যাচ্ছে না। এর ফলে মূলধন ঘাটতির মুখে পড়েছে কিছু কিছু ব্যাংক। বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো এই অবস্থার সম্মুখীন।

খেলাপি ঋণের সার্বিক অবস্থা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ব্যাংকভিত্তিক হিসাবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ছয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের। যার পরিমাণ ৮ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা বা ২৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ। এর পরে ৪০ বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের, যার পরিমাণ ছয় হাজার ২৮৫ কোটি টাকা বা ২২ দশমিক ৭০ শতাংশ। আর বিদেশী ব্যাংকের বেড়েছে এক দশমিক ২৮ শতাংশ। তবে দুই বিশেষায়িত ব্যাংকের গত এক বছরে খেলাপি ঋণ বাড়েনি, বরং কমেছে ৫ শতাংশ।

খেলাপি ঋণ বেশি এমন ব্যাংকগুলোর অবস্থা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সোনালী ব্যাংকে গত বছরের সেপ্টেম্বরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩২ শতাংশ, চলতি বছরের একই সময়ে তা বেড়ে হয়েছে ১১ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের প্রায় ৩৬ শতাংশ। জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ছয় হাজার ৫০৯ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১৮ শতাংশ। চলতি বছরের একই সময়ে তা বেড়ে হয়েছে ৮ হাজার ১৮৭ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের প্রায় ২১ শতাংশ। রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল চার হাজার ২৬৪ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের সাড়ে ২৪ শতাংশ। চলতি বছরের একই সময়ে তা বেড়ে হয়েছে চার হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের প্রায় ২৫ শতাংশ। আর বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে সাত হাজার ৭০৩ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের প্রায় সাড়ে ৫৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান মতে, সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর প্রভিশন সংরক্ষণ করার কথা ছিল ২২ হাজার ৯৪ কোটি টাকা, কিন্তু প্রভিশন সংরক্ষণ করা হয়েছে সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা। ফলে প্রভিশন ঘাটতি হয়েছে প্রায় সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা। বেশি প্রভিশন ঘাটতি হয়েছে বেসিক ব্যাংকের তিন হাজার ৪২১ কোটি টাকা, রূপালী এক হাজার ২৪৫ কোটি টাকা এবং সোনালীর দুই হাজার ৯০০ কোটি টাকা। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রভিশন ঘাটতির মুখে পড়েছে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক ১৯৮ কোটি টাকা, ন্যাশনাল ব্যাংকের ৮৬১ কোটি টাকা।

ব্যাংকাররা জানান, খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণের সক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ঋণ আটকে যাওয়ায় কাক্সিক্ষত হারে বিনিয়োগ করা যাচ্ছে না। অবস্থার উন্নতি না হলে সামনে লোকসানের মুখে পড়বে বেশির ভাগ ব্যাংক।



এ পাতার আরও খবর

“ছুটির আড়ালে কূটনৈতিক বাণিজ্য: খলিলুর রহমানের নীরব ‘সফর’ ও স্বচ্ছতার অভাব” “ছুটির আড়ালে কূটনৈতিক বাণিজ্য: খলিলুর রহমানের নীরব ‘সফর’ ও স্বচ্ছতার অভাব”
বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের রেকর্ড বৃদ্ধি: ব্যাংক খাতে সংকট বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের রেকর্ড বৃদ্ধি: ব্যাংক খাতে সংকট
লন্ডনে বিলাস, দেশে ভোটের প্রতারণা - ইউনূসের ভণ্ড রাজনীতির মুখোশ উন্মোচন কসিম উদ্দিনের বয়ান সমাচার লন্ডনে বিলাস, দেশে ভোটের প্রতারণা - ইউনূসের ভণ্ড রাজনীতির মুখোশ উন্মোচন কসিম উদ্দিনের বয়ান সমাচার
বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্ণর আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে ঘুষ, চক্রান্ত ও অবৈধ নিয়োগের অভিযোগ! বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্ণর আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে ঘুষ, চক্রান্ত ও অবৈধ নিয়োগের অভিযোগ!
ইউনূসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক  অপরাধ আদালতে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি ইউনূসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি
ড. ইউনূসের লন্ডন সফর: রাষ্ট্রীয় খরচে ব্যক্তিগত সম্মাননা, জনমনে প্রশ্ন ড. ইউনূসের লন্ডন সফর: রাষ্ট্রীয় খরচে ব্যক্তিগত সম্মাননা, জনমনে প্রশ্ন
সন্দেহজনক লেনদেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের  উত্তর না পাওয়াতে আমার জিজ্ঞাসা?  সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল সন্দেহজনক লেনদেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর না পাওয়াতে আমার জিজ্ঞাসা? সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল
সন্দেহজনক লেনদেন ইউনূসের নাম পরিষ্কার করে বললেন না বি এফ ইইউ প্রধান সন্দেহজনক লেনদেন ইউনূসের নাম পরিষ্কার করে বললেন না বি এফ ইইউ প্রধান
নূর আলী ও ইউনিক গ্রুপ: কর্পোরেট ক্ষমতার ছায়ায় দুর্নীতির অভিযোগ নূর আলী ও ইউনিক গ্রুপ: কর্পোরেট ক্ষমতার ছায়ায় দুর্নীতির অভিযোগ
সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের নতুন প্রস্তাবিত শাসন ব্যবস্থা সরকার ব্যবস্থা সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের নতুন প্রস্তাবিত শাসন ব্যবস্থা সরকার ব্যবস্থা

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)