ঢাকার চার কিলিং গ্রুপের ৩টিই ধ্বংস
নতুন ধারার জেএমবি গত বছর অক্টোবর থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ধারাবাহিক হত্যাকা- শুরু করে। এর মধ্যে ঢাকাতেই তাদের চারটি সিøপার সেল (জঙ্গিদের গোপন কিলিং গ্রুপ) কিলিং অপারেশনের দায়িত্ব পালন করে। সর্বশেষ গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারি ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলা চালায় এই সিøপার সেলগুলো। আরেকটি হামলার জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছিল কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা বলেন, এই চারটি সেলের ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন তামিম চৌধুরী। আর মূল অপারেশন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন নুরুল ইসলাম ওরফে মারজান। তিনি এখন গোয়েন্দা জালে আছেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের দাবি, নব্য জেএমবির যে চারটি সেল ঢাকায় সিরিজ কিলিংয়ের জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল, তার মধ্যে তিনটি এরই মধ্যে ‘ধ্বংস’ হয়ে গেছে। একটি সেল এখনো অধরা। তবে ওই সেলের সদস্যরা এক হতে পারছেন না। তারা গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এদিকে র্যাব-পুলিশসহ অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ধারাবাহিক অভিযানের কারণে নতুন কোনো সেলও একত্র হতে পারছে না। এ ছাড়া নব্য জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকজন নেতা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দাদের কব্জায় চলে আসায় এ সংগঠনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, তাদের সেল গঠন, সদস্য সংগ্রহের পদ্ধতি, অপারেশন শাখায় নিয়োগ, যে কোনো জঙ্গি হামলার ধরনসহ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয় ফাঁস হয়ে গেছে।
গুলশানে জঙ্গি হামলার তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দাদের অভিযানে নব্য ধারার জেএমবির বেশ কয়েকজন নেতা ধরা পড়েছে। গুলশানের ঘটনায় মারা যায় একসঙ্গে ৫ প্রশিক্ষিত জঙ্গি। অন্যদিকে কল্যাণপুরের অভিযানে একসঙ্গে নিহত হয় প্রশিক্ষিত ৯ জঙ্গি। এতে এ সংগঠনের মধ্যে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব, অবিশ্বাস ও আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। তা ছাড়া গত এক বছরে জেএমবির সামরিক শাখার বেশ কয়েকজন নেতা র্যাব-পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। সব মিলিয়ে এ জঙ্গি সংগঠনের সাংগঠনিক ভিত্তি পুরোপুরি নড়বড়ে হয়ে গেছে। এদিকে গুলশান হামলার পর সারা দেশে নিখোঁজদের ব্যাপারে খোঁজখবর শুরু হওয়ায় কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নতুন ধারার জেএমবির জন্য সদস্য সংগ্রহ, তাদের নানা ধরনের প্রশিক্ষণসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজেও বড় ধরনের ভাটা পড়েছে। তৈরি হয়েছে সমন্বয়হীনতা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের এডিসি মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, গত বছর অক্টোবর থেকে নতুন ধারার জেএমবি সদস্যদের বিরুদ্ধে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকাকেন্দ্রিক বা এর আশপাশে জেএমবির যে সেটআপ গড়ে উঠেছিল তার ৭৫ শতাংশই আমরা গুঁড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি। সেটা গ্রেপ্তারের মাধ্যমে হোক বা অন্য যে কোনো পদ্ধতিতে হোক। এটা সময়ের বিষয়। কিছু সময় পরপর আমরা ইফেকটিভলি কাজগুলো করছি। এখন যে ২৫ শতাংশ আছে, আমাদের কাজে গ্যাপ হলে, তা আবার হানড্রেড পারসেন্ট হয়ে যেতে পারে। এটা যেন না হতে পারে সেজন্য আমরা সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ে আছি। আমাদের লক্ষ্য জঙ্গিবাদ জিরো পারসেন্টে নিয়ে এসে ঢাকার নিরাপত্তা সুসংহত করা।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গোয়েন্দা নেটওয়ার্কে ধরা পড়েছে, কিছুদিন আগে নতুন ধারার জেএমবির কেন্দ্রীয় কমান্ড থেকে সারা দেশে তাদের সদস্যদের কাছে নির্দেশ গেছে, সংগঠনের সামরিক শাখায় কিছু ভাইরাস ঢুকে পড়েছে। যে কারণে তাদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা, পরিকল্পনাসহ অন্যান্য তথ্য চলে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে। এ অবস্থায় মাঠে থাকা সদস্যদের গ্রেপ্তার এড়াতে চুপচাপ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, নুরুল ইসলাম মারজান শুধু গুলশান হামলার অপারেশন কমান্ডার ছিলেন না, তিনি ছিলেন নতুন ধারার জেএমবির কেন্দ্রীয় অপারেশন কমান্ডার। আট মাস আগে স্ত্রীসহ নিখোঁজ হওয়ার পর গত এপ্রিলে তিনি কেন্দ্রীয় (জাতীয় সামরিক শাখা) সামরিক শাখার মূল অপারেশন কমান্ডারের দায়িত্ব পান। তার নেতৃত্বেই গত এপ্রিল থেকে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা ও ঢাকায় জঙ্গি হামলা হয়। হামলা চালাতে এই জঙ্গি নেতা মাঝেমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জেলায় ভ্রমণ করতেন। অবশ্য কৌশলগত কারণে নতুন ধারার জেএমবি আরও দুই-তিনজন সামরিক কমান্ডারকে আড়াল করে মারজানকে সামনে নিয়ে আসে। অন্য সামরিক কমান্ডারদেরও গোয়েন্দা জালে আনতে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের ডিআইজি মনিরুল ইসলাম বলেন, নতুন জেএমবির সদস্যদের আইনের আওতায় আনতে তাদের ধারাবাহিক অভিযান চলছে। সম্প্রতি এ কর্মকা- আরও জোরদার করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গুলশানে জঙ্গি হামলার অপারেশন কমান্ডার মারজান ছিল শিবিরের সাথি। এ বিষয়ে আরও জানতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জোর তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। বিশেষ করে মারজান ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের যে বিভাগের ছাত্র ছিল সেই বিভাগের নানা দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আরও কেউ জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েছে কিনা তাও জানার চেষ্টা চলছে।
এদিকে কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের তদন্তে মারজান সম্পর্কে একের পর এক নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে। মারজানের বাবাকে এনেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রাথমিক তথ্য এসেছে, ভারতে পলাতক জেএমবির শূরার সদস্য ও পশ্চিমবঙ্গ শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ মারজানের নিকটাত্মীয়। এ বিষয়েও জোর তদন্ত চলছে। সোহেলকে গ্রেপ্তারে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তৎপর।





হাসিনা ফ্যাসিস্ট নন, বরং প্রতিশ্রুতিতে ব্যর্থ গণতান্ত্রিক শাসক” — তসলিমা নাসরীন
আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ তিতাস গ্যাস পিয়ন হেলাল কি আইনের ঊর্ধ্বে?
বালাগঞ্জ-গহরপুরে রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের স্বপ্নের মেগা প্রকল্প
রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত
বেতন-বোনাস’র টাকায় তিতাস গ্যাস পিয়ন হেলাল’র কয়েক কোটি টাকার সম্পদ
“সাম্রাজ্যবাদের পুতুল নয়, প্রকৃত জনগণের সরকার চাই”-বামপন্থী নেতা মোশরেফা মিশু
ভূমি সেবা সত্যিকারার্থে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে: ভূমি সচিব
জরিপ এলাকা গরীব”" সিদ্ধিরগঞ্জে বিডিএস জরিপ’র রেকর্ড হস্তান্তরে সার্ভেয়ার হাফিজ-মারুফ গংদের ঘূষ বাণিজ্য রুখবে কে?
খাগড়াছড়িতে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি
বিএনপি নেতা হাবিবুল্লাহ রানার চাঁদাবাজি ও মামলা বাণিজ্যে অতিষ্ঠ দীঘিনালা উপজেলাবাসী