সাত খুন: শুনানিতে সাংবাদিক না থাকায় বাদীপক্ষের শঙ্কা
পক্ষকাল প্রতিবেদকঃ
নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের দুই মামলার একটির বাদীর সাক্ষ্য নেওয়ার সময় সাংবাদিকদের এজলাসে ঢুকতে না দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ন্যায় বিচার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী।
সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় এই মামলায় প্রথম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়। বেলা পৌনে ১১টার দিকে ‘আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম হত্যা মামলা’র বাদী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল সাক্ষ্য দেন।
এ সময় দুই মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনসহ ২৩ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। অন্য ১২ আসামি পলাতক।
আদালতের কার্যক্রম শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী আশরাফুজ্জামান ও ফরহাদ হোসেন বলেন, মামলার বাদী কীভাবে, কখন ও কোথায় হত্যা করা হয়েছে- তার বিশদ বর্ণনা দিতে পারেননি।
মামলায় অভিযোগপত্র গঠনের বিরুদ্ধে কয়েকজন আসামির পক্ষে ইতোমধ্যে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
বাদীপক্ষের আইনজীবী জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের এজলাসে ঢুকতে না দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছি, এই মামলায় প্রভাবশালী একটি মহল প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে।
“সংবাদকর্মীদের এজলাসে থাকতে না দেওয়ায় ন্যায় বিচার নিয়ে নতুন করে শঙ্কা তৈরি হল।”
এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওয়াজেদ আলী খোকন সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের নির্দেশনা ছিল সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে আইনজীবী, সাক্ষী ও আসামি ছাড়া অন্য কেউ থাকবে না।
২০১৪ সালে সাত খুনের দুই মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ২৩ আসামির উপস্থিতিতে ৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন নির্ধারণ করে আদালত।
অপর মামলাটির বাদী নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি। তিনি ‘প্যানেল মেয়র কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও তার চার সহযোগী হত্যা মামলা’টি দায়ের করেন।
বিউটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৩ মার্চ দিন ধার্য করেছে আদালত।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের ফতুল্লার লামাপাড়া থেকে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ পাওয়া যায়।
এ মামলায় নূর হোসেন ও র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ মোট ২৩ জন কারাগারে আটক রয়েছেন।
নূর হোসেন ছাড়া বাকিরা হলেন- সামরিক বাহিনী থেকে বরখাস্ত তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, এম এম রানা ও আরিফ হোসেন, র্যাব সদস্য এসআই পূর্ণেন্দু বালা, এএসআই বজলুর রহমান ও আবুল কালাম আজাদ, হাবিলদার এমদাদুল হক ও নাসির উদ্দিন, কনস্টেবল শিহাব উদ্দিন ও বাবুল হাসান, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্সনায়েক হীরা মিয়া, বেলাল হোসেন, ল্যান্স কর্পোরাল রুহুল আমিন, সিপাহী আবু তৈয়ব, নুরুজ্জামান ও আসাদুজ্জামান নূর এবং নূর হোসেনের সহযোগী মোর্তুজা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দীপু, রহম আলী ও আবুল বাশার।
র্যাবের সার্জেন্ট এনামুল কবীর, এএসআই কামাল হোসেন, কর্পোরাল মোখলেছুর রহমান, সৈনিক আব্দুল আলিম, মহিউদ্দিন মুন্সী, আল আমিন শরীফ, তাজুল ইসলাম ও কনস্টেবল হাবিবুর রহমান পলাতক।
এছাড়া নূর হোসেনের আরেক সহযোগী বন্দর উপজেলার কুড়িপাড়া এলাকার সেলিম ভারতের কারাগারে আটক রয়েছেন।