
শুক্রবার, ৮ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | সম্পাদক বলছি » সম্পাদকীয়: ছায়া-শাসনের ছায়ায় বাংলাদেশ-নির্বাচনের সময়সূচি, পরিসংখ্যান ও ভবিষ্যতের প্রশ্ন
সম্পাদকীয়: ছায়া-শাসনের ছায়ায় বাংলাদেশ-নির্বাচনের সময়সূচি, পরিসংখ্যান ও ভবিষ্যতের প্রশ্ন
লিখেছেন: সম্পাদকীয় বিভাগ | ৭ আগস্ট ২০২৫
বাংলাদেশে মোহাম্মদ ইউনুস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এক বছর পূর্ণ করেছে। ছাত্র-আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসনের পতনের পর, এই সরকার গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসে। কিন্তু এক বছর পরও নির্বাচনের সময়সূচি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, এবং বিদেশি প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
নির্বাচনের সময়সূচি: প্রতিশ্রুতি, কিন্তু অনিশ্চয়তা
২০২৫ সালের ৫ আগস্ট, “জুলাই বিপ্লব দিবস” উপলক্ষে দেওয়া এক ভাষণে মোহাম্মদ ইউনুস ঘোষণা করেন যে জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এর আগে অনুষ্ঠিত হবে, অর্থাৎ রমজানের আগেই।
তিনি বলেন, “জনগণ deserves a voice in shaping the next chapter of our democracy”
তবে নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করেননি, বরং নির্বাচন কমিশনকে প্রস্তুতির নির্দেশ দেবেন বলে জানান
এই ঘোষণাকে কেউ কেউ স্বাগত জানালেও, BNP ও অন্যান্য দল বলছে:
ফেব্রুয়ারি-রমজান সময়কাল প্রচারণার জন্য অনুপযুক্ত
এপ্রিল মাসে SSC পরীক্ষা থাকায় নির্বাচন আরও জটিল হবে
আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ অবস্থান নির্বাচনকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে
রাজনৈতিক পরিসংখ্যান: অস্থিরতা ও প্রতিরোধ
৮০০+ নিহত হয়েছেন ২০২৪ সালের ছাত্র-আন্দোলনে
১০,০০০+ গ্রেপ্তার, যার মধ্যে রয়েছে সাবেক মন্ত্রিসভা সদস্য, মেয়র, RAB ও পুলিশ কর্মকর্তারা
৪০% তরুণ বেকার, মুদ্রাস্ফীতি ১২.৬% (জুন ২০২৫)
২০,০০০+ জন হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে অংশ নিয়েছেন, যেখানে নারী অধিকার ও ধর্মনিরপেক্ষতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া হয়
বিশেষজ্ঞ মতামত: সময়সূচি কি যথেষ্ট?
আব্দুল আলিম, নির্বাচন বিশ্লেষক ও নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সদস্য বলেন:
“ইউনুসের ঘোষণায় কিছুটা স্বচ্ছতা এসেছে, কিন্তু নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট সময়সূচি ছাড়া এটি রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দূর করতে পারছে না।”
ড. ইফতেখারুজ্জামান, TIB:
“সংস্কারের প্রতিশ্রুতি আছে, কিন্তু বাস্তবায়নের গতি নেই। রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব ও প্রশাসনিক দুর্বলতা এখনও বিদ্যমান।”
মিনাক্ষী গাঙ্গুলি, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ:
“আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন হলে তা আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না। গণতন্ত্রের মানদণ্ড পূরণ করতে হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন জরুরি।”
বিচার বিভাগে প্রভাব ও রাজনৈতিক পুনর্বিন্যাস
জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়া হয়, মার্কিন কূটনীতিকের বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর
জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের আদেশও বাতিল
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, বিচারাধীন
এই পদক্ষেপগুলো আইনি সংস্কার না রাজনৈতিক প্রতিশোধ-এই প্রশ্ন এখন গুরুত্বপূর্ণ।
: গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ কোন পথে?
বাংলাদেশ এখন এক রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে।
মার্কিন কূটনীতিকদের ছায়া-নিয়ন্ত্রণ
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন
ছাত্র আন্দোলনের দাবির অপূর্ণতা
এবং নির্বাচনের অনিশ্চয়তা
এই বাস্তবতায়, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, স্বচ্ছতা, এবং জবাবদিহিতা ছাড়া কোনো পথ নেই।