পক্ষকাল সংবাদ ডেস্কঃ সচিবালয়ে ছাত্র-জনমিছিলে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া: ঘটনাপ্রবাহ এবং দাবিদাওয়া
কর্ণারভ্যানের মতো ছুটছে পুলিশ, পাল্টা সাইরে ছুটছে শিক্ষার্থীরা। ২২ জুলাই বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে সচিবালয়ের সামনে ঘটে যাওয়া জটিল ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এই ঘটনা শুধু নয় যে কয়েক রাস্তায় বেগ পেতে পুলিশকে ছুটতে দেখলাম, তার সঙ্গে যুক্ত ছিল সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়া ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপের শব্দ।
ঘটনাপ্রবাহ
বিকেল ৩টা থেকে ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী সচিবালয়ের প্রধান প্রবেশমুখে জমায়েত হয়ে তারা বিকেল ৩টায় “এইচএসসি বাতিল কর” এবং “ফল সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে প্রকাশ কর” স্লোগান দিয়ে শুরু করেন সংগ্রাম।
বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে প্রবেশের চেষ্টায় প্রাণবন্ত ভাঙচুর প্রেস কন্ট্রোলে পার্কিংয়ে রাখা অন্তত ৪-৫টি গাড়ি শিক্ষার্থীরা ভাঙচুর করেন। এ সময় পুলিশ লাঠি হাতে ধাওয়া শুরু করে।
সরাসরি সংঘর্ষে সাউন্ড গ্রেনেড ও গ্যাস শেল পুলিশ প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ঢেলে, তারপর সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দ করে ধাওয়া চালায়। মুখ থুবড়ে থাকা শিক্ষার্থীরাও তাতে সরে যায়নি, পাল্টা ছুটতে থাকে সরকারি ফটকের দিকে3।
সংলগ্ন সড়কে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া স্মরণ আরামবাগ সড়কে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার দৃশ্য, নিরাপত্তা বাহিনীকে সটান ভাষায় সতর্ক করতে শোনা গেছে। ধাওয়া-বাধার অবস্থায় প্রায় ২০ মিনিট যান চলাচল বন্ধ থাকে। শেষমেশ পুলিশ লোকাল ট্রাফিক সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শিক্ষার্থীদের ছয়দফা দাবি
চলমান এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা বাতিল
সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফল প্রকাশ
খাতভিত্তিক ক্লাস ও রুটিন ফিরিয়ে আনার নিশ্চয়তা
ক্ষতিপূরণ ও মানসিক সহায়তা
ভবিষ্যৎ প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষায় স্বচ্ছ প্রক্রিয়া
কোন শিক্ষার্থী হয়রানি থেকে নিরাপদ থাকবে-রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি
এদের মধ্যে “ফল সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে প্রকাশ” এবং “পরীক্ষা বাতিল” দাবি সবচেয়ে জোরালো স্লোগান হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, “আমরা বিনা ঝামেলায় ফল পেতে চাই, তার জন্য র্যাগুলার মার্কশীট দেখানোর প্রয়োজন নেই।”
পুলিশের তৎপরতা ও নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টা
লাঠিচার্জ ও তীব্র শব্দের গ্রেনেডে ত্রাসকাঁদানে গ্যাস ঢেলে ভাঙচুরকারীদের সরানোনিরাপত্তা বেড়াতে সেনা সদস্যদের মোতায়েনপ্রশাসনিক সাইটে প্রবেশের চেষ্টা রোধে দমকল-জি টিম কল্য়াপস
১৫ মিনিটের মধ্যে প্রধান ফটক উদ্ধার, যান চলাচল স্বাভাবিকীকরণ
নিরাপত্তা ব্যুরো পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “ছাত্রদের দাবি ন্যায্য হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা আমাদের মূল কর্তব্য। কেউ যাতে উগ্রতা দেখাতে না পারে, সে জন্য আমরা কঠোর অবস্থান নিয়েছি।”
পরিপ্রেক্ষিত
সচিবালয়ে বিক্ষোভের আগে নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল প্রকাশে অসঙ্গতি ধরা পড়ায় বহু ছাত্র হতাশ। অনেকে আবার নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিষয়ক ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছে। এই চূড়ান্ত ক্ষোভের অভিব্যক্তিই আজকের সংঘর্ষের মূল উপাদান।
সচিবালয়ের সিন্দোকালীন মুহূর্তগুলো প্রমাণ করল-শিক্ষার্থীদের দাবি ও নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্বের মধ্যে আপস খুঁজে পাওয়াই আপাততো সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আগামী দিনে শিক্ষাব্যবস্থার কোনো সংশোধনী উদ্যোগে ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা তিনপক্ষের সংলাপে সেতুবন্ধন জরুরি হবে