বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি | সম্পাদক বলছি » ৪ঠা ডিসেম্বর আমাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে স্বৈরাচার পরাস্তের দিন
৪ঠা ডিসেম্বর আমাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে স্বৈরাচার পরাস্তের দিন
পক্ষকাল সংবাদ—
আজ ৪ ডিসেম্বর। আমাদের জনগণের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল দিন। ১৯৯০ সালের এ দিনটিতে উত্থাল, ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মুখে উদ্ধত সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদের পতন ঘটেছিলো।
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ বন্দুকের জোরে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিলো এরশাদ। জনগণের মৌলিক- গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে, দানবীয় হত্যাযজ্ঞ ও নির্মম দমন-পীড়ন চালিয়ে প্রায় ৯ বছর রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে রেখেছিলো ধুরন্ধর এরশাদ। হয়ে উঠেছিলো দূর্নীতি- লুটপাট, ষড়যন্ত্র, প্রতারণা, শঠতা ও নিষ্ঠুরতার প্রতিমূর্তি। কিন্তু, তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। স্বৈরশাসকদের জন্যে ইতিহাস- নির্ধারিত পরিণতি বরণ করতে বাধ্য হয়েছিলো এরশাদ। ছাত্র-জনতার লাগাতার, রক্তঝরা সংগ্রামের মুখে ১৯৯০ সালের ৪ ডিসেম্বর রাত ১০ টার বিটিভি’র সংবাদে এরশাদের পদত্যাগের ঘোষণা প্রচারিত হয়েছিলো। রাতের নীরবতা ভেঙে রাস্তায় নেমে এসেছিলো রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের মানুষ।
স্বৈরাচারবিরোধী মহান গণঅভ্যুত্থানের ২৯তম বার্ষিকীতে শিক্ষা এবং গণতন্ত্রের জন্যে আত্মদানকারী জয়নাল, মোজাম্মেল, দিপালী সাহা, ময়েজ উদ্দিন, সেলিম, দেলোয়ার, তাজুল, রাউফুন বসুনিয়া, শাজাহান সিরাজ, নূর হোসেন, জেহাদ ও ডাক্তার মিলনসহ শত শত শহীদের অমর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।
এরশাদের পতন ঘটলেও, শহীদদের স্বপ্নের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এরশাদের হাতে হাত মিলিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের ঘৃণ্য রাজনীতি শহীদদের প্রতি চরম অবজ্ঞা প্রদর্শনের পাশাপাশি জনগণকে শৃঙ্খলিত করেছে বেসামরিক স্বৈরাচার-ফ্যাসিবাদের নতুন বন্দীশালায়। তাই গণতন্ত্র ও শোষণমুক্তির সংগ্রাম আজও চলছে। সে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মেহনতি মানুষের নিজস্ব রাজনৈতিক শক্তির অভ্যুদয় ঘটলেই শহীদদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন সম্ভব।