শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

Daily Pokkhokal
সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | শিক্ষা ও ক্যারিয়ার » এক গণরুমে থাকতে হয় ২০ ঢাবি ছাত্রীকে
প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ | শিক্ষা ও ক্যারিয়ার » এক গণরুমে থাকতে হয় ২০ ঢাবি ছাত্রীকে
২৪৭ বার পঠিত
সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

এক গণরুমে থাকতে হয় ২০ ঢাবি ছাত্রীকে

---

পক্ষকাল সংবাদ-

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের হলগুলোতে আবাসন সংকট চরম। এর মধ্যে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হলো গণরুম। যদিও ছাত্রীদের হলগুলোর সমস্যা ছাত্রদের হলগুলোর মতো ব্যাপক নয়। প্রশাসনের নজরদারি এবং সাধারণ ছাত্রীদের সচেতনতায় ছাত্রী হলে বিশেষ কোনো ছাত্র সংগঠন দাপট নেই। তবে গণরুমের নিয়ন্ত্রণ একেবারে হাতছাড়াও নয় বিশেষ একটি ছাত্র সংগঠনের।

ছাত্রীসংখ্যার তুলনায় আসন কম থাকায় তীব্র আবাসন সংকট রয়েছে ছাত্রীদের আবাসিক হলগুলোতেও। অর্ধেকের মতো ছাত্রীই তাই বাধ্য হয়ে অনেক বেশি খরচ করে রাজধানীর বিভিন্ন মেসে থাকেন। যদিও এসব মেসে রয়েছে নিরাপত্তাহীনতা। এমন খবর প্রকাশ করেছে সমকাল।

চলতি বছর প্রকাশিত ঢাবি’র ৯৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্মরণিকা ও হল সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্রীসংখ্যা ১৩ হাজারের বেশি। অথচ পাঁচটি ছাত্রী হল ও দুটি ছাত্রী হোস্টেলে আসন আছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের প্রথম আবাসিক হল রোকেয়া হলে আসন রয়েছে এক হাজার ৬১৮টি। এ ছাড়া কবি সুফিয়া কামাল হলে এক হাজার ৬২৬টি, শামসুন নাহার হলে ৬৮৮টি, কুয়েত মৈত্রী হলে ৬৬১টি, ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ৪১০টি এবং নবাব ফয়জুন্নেসা ছাত্রী হোস্টেলে ১২০টি ও লেদার টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের ছাত্রীদের আবাসনের জন্য নির্মিত সুলতানা কামাল হোস্টেলে ১৫০টি আসন রয়েছে।

ছাত্রীদের হলগুলোয় যেসব গণরুম রয়েছে, সেগুলোয় আটজন থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবে থাকছেন অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন। ফলে বিছানা ভাগাভাগি ও বদলাবদলি করেই থাকতে হয় সবাইকে। রুমে পড়াশোনা করার পরিবেশ নেই- সুযোগও নেই। তাদের তাই পড়াশোনা করতে হয় রিডিং রুম কিংবা অতিথি রুমে। ছাত্রীরা জানান, হলের গণরুমে উঠতে হলে যে কোনো একজনের রেফারেন্সের মাধ্যমে আসতে হয়। পড়াশোনা দূরে থাক- ঠিকমতো ঘুমানোও যায় না, প্রাইভেসিও নেই একদম; তার পরও গণরুমের বিকল্প নেই বিশেষত নতুনদের।

রোকেয়া হলের ছাত্রী জয়শ্রী রায়। সংগীত বিভাগের প্রথম বর্ষের এই শিক্ষার্থী গণরুমের অভিজ্ঞতা বিষয়ে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে টেকার পর প্রত্যাশাই ছিল অন্য রকম। কিন্তু হলে আসার পর বুঝতে পারলাম প্রকৃত বাস্তবতা। আমাকে থাকতে দেয়া হলো গণরুমে। সেখানে ১৪ জন ছাত্রী ছিল, যেখানে থাকতে পারেন সর্বোচ্চ আটজন। বাসার পরিবেশের সঙ্গে এই গণরুমের পরিবেশের ব্যবধান আকাশ-পাতাল। এক সপ্তাহও ওখানে টিকতে পারিনি, বাসায় চলে এসেছিলাম। তার পর বাসা থেকে এসেই ক্লাস করেছি। তবে এখন হল প্রশাসনের মাধ্যমে সিট বরাদ্দ পেয়েছি, রুমের পরিবেশ মোটামুটি ভালোই।’

জয়শ্রী আরো জানান, রোকেয়া হলে বেশ কয়েকটি পলিটিক্যাল রুম রয়েছে। এসব রুমে তারাই থাকেন, যারা রাজনৈতিকভাবে এসে ওঠেন। তার পরও ছাত্রীদের সিট সমস্যা থাকত না, যদি এখানে বাইরের কেউ না থাকতেন। রোকেয়া হলে বাইরের অনেকে যেমন থাকেন, অন্যান্য হলেও অনেকে থাকেন। তারা না থাকলে রুমের ধারণক্ষমতা অনুযায়ী হলের ছাত্রীরাই সেখানে থাকতে পারতেন। তবে আশার কথা হলো, হল প্রশাসন থেকে সিট পেতে খুব দেরি হয় না। ছেলেদের হলের তুলনায় মেয়েদের হলের অবস্থা অনেক ভালো।’

কবি সুফিয়া কামাল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সানজিদা হীরা। মনোবিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রথম দিকে হলে উঠতে কারো রেফারেন্স লাগে। কিছুদিন গণরুমে থাকতে হয়। এসব রুমে দ্বিতল ছয়টি বেডসহ ঢালাই বেড মিলে ২৫ জনের মতো থাকা যায়। প্রথমদিকে অনেক খারাপ লাগে। নতুন পরিবেশ, সবাই অচেনা। সব মিলিয়ে মানিয়ে নিতে কষ্ট হয়। পরে ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যায়। তবে গণরুমে থাকতে পারলে যে কোনো জায়গায় চলার ব্যাপারটা আয়ত্তে চলে আসে। সেখানে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে, কেউ কোনো সমস্যায় পড়লে সবাই মিলে সহায়তা করা হয়। এদিক থেকে গণরুম ভালো। কিছু সমস্যাও হয়। পড়াশোনা, ঘুমানো কিংবা সামান্য ব্যক্তিগত গোপনীয়তাও বজায় রাখা কঠিন। তবে ছেলেদের হলের অবস্থা যা শুনি, তার চেয়ে এখানকার অবস্থা অনেক ভালো।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের এক ছাত্রী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার আগে কখনো বাইরে থাকিনি। হলে ওঠার মধ্য দিয়েই পরিবার থেকে দূরে কোথাও থাকার শুরু। হলে যে উঠতে পারব, তাও নিশ্চিত ছিলাম না। পরে এক আপুর মাধ্যমে জানলাম, পলিটিক্যাল রেফারেন্সে হলে ওঠা যায়। জানুয়ারির ৪ তারিখ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রোগ্রামে গিয়ে বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করলাম। কিন্তু প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা তেমন ভালো ছিল না। মনে হলো, কোথায় কীসের মধ্যে এসে পড়লাম! এভাবে যে রুমে থাকার সুযোগ পেলাম, সেখানে মোট ২০ জন থাকতাম। প্রথম পাঁচ-ছয় মাস থাকতে বেশ কষ্ট হয়েছে।’

মৈত্রী হলের এই শিক্ষার্থী আরো বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত আগে একজন শিক্ষার্থীর আবাসন নিশ্চিত করা। যতজনের আবাসন নিশ্চিত হবে, শুধু তাদেরই ভর্তি করা। গণরুমের পরিবেশ অবশ্য সৌহার্দ্যমূলক। একজন আরেকজনের বিপদে-আপদে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন। কিন্তু তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এসে গণরুম সিস্টেম থাকা লজ্জাজনক। কেননা, একজন বিশ্ববিদ্যালয়পড়ূয়া শিক্ষার্থীকে নতুন করে শেখানোর কিছু নেই। প্রত্যেক শিক্ষার্থীরই প্রাইভেসির দরকার, গণরুমে সেটি থাকে না। পড়াশোনা ও ঘুমানোর সমস্যা তো আছেই।’

এ বিষয়ে রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জিনাত হুদা ওয়াহিদ বলেন, ‘আবাসন সমস্যা দূর করার জন্য সবচেয়ে জরুরি হলের সংখ্যা বাড়ানো। আর হলে বসবাসরত শিক্ষার্থীদের মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তনও আনতে হবে। তাদের বুঝতে হবে, তাদের জুনিয়ররাও একদিন এখানে থাকতে আসবে। তাই সময়মতো তাদের সিট ছেড়ে দিতে হবে।’

কুয়েত মৈত্রী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবা নাসরিন বলেন, ‘গণরুম ও আবাসন সমস্যার সমাধান করতে হলে যাদের ছাত্রত্ব নেই এবং যাদের রেজাল্ট হয়ে গেছে, তাদের হল ত্যাগ করার নিয়ম কঠোরভাবে পালন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা প্রয়োজন। এছাড়া সত্যিই যাদের হলের সিট প্রয়োজন, অন্তত তাদের সিটের ব্যবস্থা হল প্রশাসনের করা উচিত। সেদিকে নজর দেয়া হচ্ছে।’

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘গণরুম ও আবাসন সংকট দূর করতে কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ছাত্রীদের আবাসন সমস্যাও কর্তৃপক্ষের নজরে রয়েছে। গণরুম দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত সমস্যা- দিনক্ষণ বেঁধে এর সমাধান করা সম্ভব নয়।’



এ পাতার আরও খবর

নানা আয়োজনে নববর্ষ বরণের প্রস্তুতি নানা আয়োজনে নববর্ষ বরণের প্রস্তুতি
রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে প্রস্তুত রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে প্রস্তুত
পুতিনের বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যের পারমাণবিক প্রতিরোধকে জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সুনাক পুতিনের বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যের পারমাণবিক প্রতিরোধকে জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সুনাক
মস্কোর কনসার্ট হলে হামলায় আদালতে  তিনজন সন্দেহভাজন দোষী সাব্যস্ত মস্কোর কনসার্ট হলে হামলায় আদালতে তিনজন সন্দেহভাজন দোষী সাব্যস্ত
কনসার্ট হল গণহত্যার সন্দেহভাজনদের আদালতে হাজির, মৃতের সংখ্যা বাড়ছে কনসার্ট হল গণহত্যার সন্দেহভাজনদের আদালতে হাজির, মৃতের সংখ্যা বাড়ছে
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ‘চীনা হস্তক্ষেপ “নিয়ে নিষেধাজ্ঞার দিকে নজর দেবে যুক্তরাজ্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ‘চীনা হস্তক্ষেপ “নিয়ে নিষেধাজ্ঞার দিকে নজর দেবে যুক্তরাজ্য
মস্কো হামলার পর ইসলামিক স্টেট নিয়ে যুক্তরাজ্যের ‘একেবারে’ উদ্বিগ্ন হওয়া উচিতঃ হান্ট মস্কো হামলার পর ইসলামিক স্টেট নিয়ে যুক্তরাজ্যের ‘একেবারে’ উদ্বিগ্ন হওয়া উচিতঃ হান্ট
ন্যাটোর মিত্র রাশিয়ার সঙ্গে ‘সরাসরি যুদ্ধ’ বাধাগ্রস্ত করার জন্য মর্মান্তিক সতর্কতা জারি করেছে ন্যাটোর মিত্র রাশিয়ার সঙ্গে ‘সরাসরি যুদ্ধ’ বাধাগ্রস্ত করার জন্য মর্মান্তিক সতর্কতা জারি করেছে
চীনের  গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বিঘ্নিত করার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সোমবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে ব্রিটেন চীনের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বিঘ্নিত করার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সোমবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে ব্রিটেন
রমজানে হামলা সহিংসতায় ইন্ধন জোগাচ্ছে রমজানে হামলা সহিংসতায় ইন্ধন জোগাচ্ছে

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)