শিরোনাম:
ঢাকা, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

Daily Pokkhokal
বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » এই মামলা রাজনৈতিক কালিমালিপ্ত, লিখিত-মৌখিক কোনো প্রমাণ নেই
প্রথম পাতা » অপরাধ | ব্রেকিং নিউজ | রাজনীতি » এই মামলা রাজনৈতিক কালিমালিপ্ত, লিখিত-মৌখিক কোনো প্রমাণ নেই
৩৬৭ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

এই মামলা রাজনৈতিক কালিমালিপ্ত, লিখিত-মৌখিক কোনো প্রমাণ নেই

---
পক্ষকাল সংবাদঃজিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে গিয়ে তার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ যেভাবে নির্দেশিত হয়েছেন সেভাবেই অভিযোগপত্র দিয়েছেন। এই মামলায় রাজনৈতিক গন্ধ আছে। মামলা রাজনৈতিক কালিমালিপ্ত।’

বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে পঞ্চম দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় জিয়া অরফানেজের টাকা তছরুপ হওয়ার কোনো তথ্যপ্রমাণ নেই বলে আদালতকে তিনি অবহিত করেন।

আদালতকে আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন জানান, জিয়া অরফানেজের টাকা কুয়েতের আমির পাঠিয়েছিলেন এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান সেই টাকা এনেছিলেন। ওই টাকা জিয়া মেমোরিয়াল ট্রাস্টে গিয়েছিল। অথচ সেখানে কোনো মামলা হয়নি। একই যাত্রায় কেন দুই রকম ফল? এটা তো হয় না।

খন্দকার মাহবুব হোসেন আরও বলেন, ‘ঘষামাজা স্বাক্ষরবিহীন কাগজ দিয়ে মামলা তৈরি করা হয়েছে। সব সাক্ষ্যপ্রমাণে দেখা যায়, এই মামলায় কোনো পয়সার তছরুপ হয়নি। খালেদা জিয়া কোনো অ্যাকাউন্ট খোলেননি। তাহলে তাকে সাজা দিতে হবে কেন?’

তিনি বলেন, দেশের সর্বোচ্চ জনপ্রিয় নেত্রীর বিরুদ্ধে ঘটনার ১৭ বছর পর কেন মামলা করা হলো? কেন প্রদীপ জ্বলে উঠল?

খন্দকার মাহবুব আদালতের উদ্দেশে বলেন, এখনো অনেক বিচারক আছেন, যারা রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে বিচার করছেন। ইতিহাসের পাতায় বিচারকদের নাম লেখা থাকে। সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এই আদালত ন্যায়বিচার করবেন বলে তিনি আশা করেন।

এর আগে সকাল ১১টায় খালেদা জিয়া তার গুলশানের বাসভবন থেকে রওনা হয়ে বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটের দিকে ঢাকার বকশীবাজারের বিশেষ আদালতে পৌঁছান।

বুধবার বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে শুরু হয়ে মাঝখানে ১৫ মিনিটের বিরতি দিয়ে বেলা ২টা পর্যন্ত শুনানি চলে আদালতে। এসময় খালেদার আইনজীবী আব্দুর রেজাক খানের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে অপর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন।

আদালতে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, এটি একটি রাজনৈতিক মামলা। খালেদা জিয়াকে চোর বানানোই এই মামলার আসল উদ্দেশ্য।

আব্দুর রেজাক খান বলেছেন, সংবিধানের ৫৫ ও ৫৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো পাবলিক সার্ভেন্ট কোনো মামলার আসামি হতে পারে না। এসময় তিনি দাবি করেন এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ আনতে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধ অভিযোগ প্রমাণ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। আমি সম্মানের সাথে আদালতকে বলেছি, এই মামলায় খালেদা জিয়াকে খালাস দেয়া হোক।

এর আগে আব্দুর রেজাক খান আদালতে বলেন, ‘খালেদা জিয়া কুয়েতের টাকা রাখার জন্য অ্যাকাউন্ট খুলেছেন তার প্রমাণশূন্য। শুধু তাই নয়, তার (খালেদা জিয়া) বিরুদ্ধে লিখিত ও মৌখিক কোনো প্রমাণও নেই।’

আব্দুর রেজাক খান আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে কুয়েত থেকে আসা টাকা আত্মসাৎ করেছেন এর কোন প্রমাণ নেই। মামলার কোনো সাক্ষীও এ বিষয় কিছু বলেন নাই।’

তিনি বলেন, ‘মামলার এফআইআর-এ আছে বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তা মোটেও ঠিক নয়। আর এফআইআর-এ কথা যে বেদের মত বিশ্বাস করতে হবে তাও ঠিক না।’

এর আগে বুধবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসভবন থেকে রওনা দিয়ে বেলা ১১টার দিকে বিশেষ আদালতে পৌঁছালে ১১টার পর ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে অসমাপ্ত যুক্তিতর্ক উপস্থান শুরু হয়।

আদালতে উপস্থিত খালেদা জিয়ার যুক্তি উপস্থাপনের দিন ধার্য করা হয়েছিল মঙ্গলবার। এর আগে মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মত যুক্তি উপস্থাপন করেন তার আইনজীবীরা।

গত ২০ ও ২১ ডিসেম্বর খালেদার পক্ষে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় যুক্তি উপস্থাপন করেন খালেদার আইনজীবীরা। এর আগে ১৯ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলায় যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন।

২১ ডিসেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান। ওই দিন তার যুক্তি উপস্থাপন শেষ না হওয়ায় ২৬, ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের দিন ধার্য করেন আদালত।

অন্যদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন খালেদা জিয়া এবং মামলায় কোনো সাফাই সাক্ষী দেবেন না বলেন তিনি। এরপর আদালত মামলাটির যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ২৬, ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরে ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর সাবেক নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

এ ছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অপর একটি মামলা করে দুদক। ২০১০ সালের ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া বাকি আসামিরা হলেন, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।



এ পাতার আরও খবর

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট: গণতন্ত্রের সংকট ও জনগণের প্রত্যাশা বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট: গণতন্ত্রের সংকট ও জনগণের প্রত্যাশা
ইরানের পরমাণু ঘাঁটিতে ইজরায়েলের হামলা! জারি জরুরি অবস্থা, উত্তাল বিশ্বরাজনীতি ইরানের পরমাণু ঘাঁটিতে ইজরায়েলের হামলা! জারি জরুরি অবস্থা, উত্তাল বিশ্বরাজনীতি
ইউনূসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক  অপরাধ আদালতে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি ইউনূসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি
তিতাস গ্যাস খেকো প্রকৌশলী সিদ্দিকুর’র হাতে দুর্নীতির রহস্যময় যাদুর কাঠি তিতাস গ্যাস খেকো প্রকৌশলী সিদ্দিকুর’র হাতে দুর্নীতির রহস্যময় যাদুর কাঠি
গুম ফিরে আসা সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল’র বাক স্বাধীনতা হরণ গুম ফিরে আসা সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল’র বাক স্বাধীনতা হরণ
শফিকুল ইসলাম কাজলের ফেসবুক আইডি বন্ধ: বাকস্বাধীনতা হরণের আরেকটি উদাহরণ শফিকুল ইসলাম কাজলের ফেসবুক আইডি বন্ধ: বাকস্বাধীনতা হরণের আরেকটি উদাহরণ
সন্দেহজনক লেনদেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের  উত্তর না পাওয়াতে আমার জিজ্ঞাসা?  সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল সন্দেহজনক লেনদেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর না পাওয়াতে আমার জিজ্ঞাসা? সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল
নূর আলী ও ইউনিক গ্রুপ: কর্পোরেট ক্ষমতার ছায়ায় দুর্নীতির অভিযোগ নূর আলী ও ইউনিক গ্রুপ: কর্পোরেট ক্ষমতার ছায়ায় দুর্নীতির অভিযোগ
দুর্নীতির বরপুত্র ওসি মোজাম্মেল’র  জোর কোথায়? পর্ব-৩) দুর্নীতির বরপুত্র ওসি মোজাম্মেল’র জোর কোথায়? পর্ব-৩)
পাপিয়া কেলেঙ্কারি ও গুমের অভিযোগ: নূর আলীর ষড়যন্ত্র ও শেখ হাসিনার সরকারের ভূমিকা পাপিয়া কেলেঙ্কারি ও গুমের অভিযোগ: নূর আলীর ষড়যন্ত্র ও শেখ হাসিনার সরকারের ভূমিকা

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)